tag:blogger.com,1999:blog-302984772024-03-14T09:02:48.726+06:00সসংকোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহসUnknownnoreply@blogger.comBlogger131125tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-57121714803338771742013-04-04T16:14:00.002+06:002013-04-04T16:14:28.809+06:00ব্ল্যাক আউট<br />
সরকারের মৌলবাদতোষণ।<br />
ব্লগার গ্রেফতার।<br />
প্রতিবাদ, প্রতিরোধ।<br />
<br />
<br />
ব্ল্যাকআউট!<br />
<br />
<br />
<br />
<br />
<a href="http://i.imgur.com/vVCUdZv.jpg" imageanchor="1"><img border="0" height="320" src="http://i.imgur.com/vVCUdZv.jpg" width="320" /></a>Unknownnoreply@blogger.com7tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-67310839663380284202012-05-28T17:06:00.000+06:002012-06-16T17:07:06.348+06:00বিরিঞ্চিবাবা<br />
কাওরানবাজার এলাকায় তিনিই সূর্যোদয় ঘটাইয়া থাকেন।<br />
<br />
কর্মবীর পুরুষ তিনি। তাঁহার জাগরূক কাল সম্পূর্ণ ব্যয় হয় কামের চিন্তায়। তাই অতি প্রত্যূষে নগরীর অনিবার্য যানজট বাঁধিবার পূর্বেই তিনি আপিসে স্বীয় কক্ষে ও মহাজগতে স্বীয় কক্ষপথে অবস্থান গ্রহণ করেন। বেয়ারা আসিয়া একটি ঝকঝকে গেলাসে পানীয় জল ও তশতরিতে মিষ্টান্নাদি রাখিয়া দরজায় স্বয়ংক্রিয় ছিটকিনিটি টিপিয়া দুয়ার আঁটিয়া কাটিয়া পড়ে। কিয়ৎকাল পরই তাহার মন্দ্রস্বর ছড়াই পড়ে সমগ্র আপিসে। কাওরানবাজার এলাকায় ঊষাকালে সক্রিয় সকলেই শুনিতে পায় তাহার সেই প্রলম্বিত তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মহানাদ, "ওঠ!"<br />
<br />
"ওঠ!"<br />
<br />
"ওঠ!"<br />
<br />
সূর্য উঠিয়া পড়ে।<br />
<br />
সারাটি দিন আপিসের নানা কর্মাদির যজ্ঞে ঘৃত ঢালিয়া, দূরালাপনীতে ইহজাগতিক নানা দুরুশ্চার্য আলাপ সারিয়া, বৈকালিক ধ্যানে বসিবার পূর্বে তিনি বেয়ারাকে গলা খাঁকরাইয়া পুনর্বার ডাকেন। বেয়ারা আসিয়া দরজায় ছিটকিনি টিপিয়া দুয়ার আঁটে।<br />
<br />
কাওরানবাজারের ব্যস্ত সড়কে শকটাদির মুহুর্মুহু আর্তনাদ ছাপাইয়া আবারও শ্রুত হয় তাহার মহামন্ত্র, "ওঠ!"<br />
<br />
"ওঠ!"<br />
<br />
"ওঠ!"<br />
<br />
চন্দ্র উঠিয়া পড়ে তাহার ভগ্নাংশ সম্বল করিয়া।<br />
<br />
পর্বতারোহী মূষা ব্রহ্ম টিসু কাগজে আঁসু মুছিয়া কাগজে লিখিলেন, ভাই সাহেবের দোয়া মাঙিতে গিয়াছিলাম। গিয়া দেখি দরজা বন্ধ। এক ঘন্টা কাটিল, দুই ঘন্টা কাটিল, দরজা আর খোলে না। দরজায় করাঘাতের সাহস আমার হয় নাই। ভয়ে ভয়ে তাহার নিষ্প্রাণ কাষ্ঠের বুকে কান পাতিয়া শুনিলাম, ভাই সাহেব ভূলোক দ্যূলোক গোলক ভেদিয়া খোদার আসন আরশ ছেদিয়া বলিতেছেন, "ওঠ! ওঠ!" হৃদয়ের তারে তারে, প্রাণের শোণিত ধারে, কী যে এক ঢেউ উঠিল ভক্তির তুফানে! তৎক্ষণাৎ বাহির হইয়া পড়িলাম। আমাকে উঠিতে হইবে। ফকিরাপুলের জলাধার হৌক আর ইভাহৃষ্ট পর্বত, আমাকে উঠিতেই হইবে। ভাই কহিয়াছেন ওঠ। আমি উঠিবই। উঠিতে না পারিলে ফটোশপ ব্যবহার করিব।<br />
<br />
কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, স্তম্ভলেখক, পর্বতারোহী সংগঠনের সভাপতি, বিজ্ঞাপক ও লুঙ্গিপরিধায়ক সাংবাদিকটি পার্শ্ববর্তী আগন্তুককে জড়াইয়া ধরিয়া হাপুস কাঁদিয়া কহিলেন, এখন আমার বেলা নাহি আর বহিব একাকী হৃদয়ের ভার। গিয়াছিলাম ক্রীড়াক্ষেত্রে, ক্রিকেটযুদ্ধ অবলোকনে। আমাদের তামিম, আমাদের সাকিব, গরিব মায়ের গরিব ছেলেগুলি, দুবেলা দুমুঠো ভক্ষণ করিতে পায় কি পায় না, কেমন করিয়া দখিনে বামে চতুষ্ঠী ষষ্ঠী হাঁকড়াইতেছে গো! আবেগে আমার কুক্ষিদেশ মোচড় মারিয়া উঠিল। আমি মুষ্ঠিফোন তুলিয়া ভাই সাহেবকে মারিলাম ফোন। ভাইসাহেব ফোন ধরিলেন না প্রথমে। পাঁচ মিনিট কাটিল, দশ মিনিট কাটিল, তারপর ফোন ধরিয়া শুধু কহিলেন, "ওঠ!" আমি নিজে তো উঠিলামই, গোটা গ্যালারি উঠিল, উঠিয়া নর্তন করিতে লাগিল। ওগো তোমরা আমায় মাধবদী হইতে একটি গামছা কিনিয়া দাও, এত জল ও কাজল চোখে পাষাণী আনলে বল কে?<br />
<br />
এমনি করিয়া নগরের সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করিল, তিনিই আজকাল চন্দ্রসূর্য চালাইতেছেন, নিম্নকে উচ্চে উঠাইতেছেন। সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের সময় কোন নালায়েক জোর করিয়া সিটে বসিয়া থাকিলে শোনা যায় তাহার দূরাগত হুহুঙ্কার, ওঠ! বসুন্ধরার বুক বসুন্ধরা কর্তৃক জবরদখলকৃত হইলে শোনা যায় তাহার পরিত্রাণমন্ত্র, ওঠ! ফুটপাথ জবরদখলকারী হকার, ঝোপের গহীন কন্দরে ঘনিষ্টতালোভী যুগল, ট্যাঙ্কের পাদানিতে দ্বিধাগ্রস্ত জেনারেল, সকলেই এক বাক্যে তাহার ধমকে উঠিয়া পড়ে।<br />
<br />
ওঠে না শুধু তাহার বিরিঞ্চিবাবাটি। আর ল্যাপটপের পর্দায় পুনম পাণ্ডে মিটিমিটি দুষ্ট হাসি হাসে, বছরের পর বছর।<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-30660677437338294252011-11-23T17:05:00.000+06:002012-06-16T17:06:06.051+06:00আদমচরিত ০৪৮<br />
গিবরিল আসিয়া হাঁপাইতে হাঁপাইতে কহিল, "শিগগীর আইস, সর্বনাশ ঘটিতেছে!"<br />
<br />
আদম খড়শয্যায় অর্ধশায়িত হইয়া সাভিনিবেশে একটি পাতলা পুস্তক পাঠ করিতেছিল, মনোসংযোগে বিঘ্ন ঘটায় সে চটিয়া কহিল, "সর্বনাশের জন্য কিছু বাকি আছে নাকি? আমার যা কিছু ছিল বুঢ়বাক ঈশ্বরের চক্রান্তে মাটি হইয়াছে। মহাপ্লাবনে স্বর্গ ডুবিলেও আমার কিছু আসে যায় না হে গিবরিল!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তোমার বাড়ির পিছনের বাঁশবাগানটি শয়তান ইজারা লইয়াছে!"<br />
<br />
আদম সাবধানে পাতলা পুস্তকটি বালিশের নিচে চালান করিয়া দিয়া কহিল, "বিদ্যালাভের সময় সর্বদাই বিপত্তি ঘটে রে গিবরিল। চল দেখিয়া আসি।"<br />
<br />
কয়েক শত গজ পা চালাইয়া নিকটস্থ বাঁশঝাড়ের সমীপে আসিয়া দুইজনে দেখিল, শয়তান আরও কতিপয় স্বর্গদূত সঙ্গে লইয়া ফিতা লইয়া বংশদণ্ডের আকার প্রকার মাপজোক করিতেছে।<br />
<br />
আদম হাঁকিয়া কহিল, "সুপ্রভাত বন্ধু! হঠাৎ বাঁশঝাড়ে? বলি মতলবখানা কী?"<br />
<br />
শয়তান ডাক শুনিয়া পিছু ফিরিয়া আদমকে দেখিয়া মধুর হাস্যে কহিল, "সুপ্রভাত আদম! ভাবিলাম, অনেক তো হইল, এইবার কৃষিকাজে মন দেই।"<br />
<br />
গিবরিল ফুঁসিয়া কহিল, "বাঁশ কবে কৃষিখাতের অন্তর্ভুক্ত হইল?"<br />
<br />
শয়তান স্মিত মুখে কহিল, "মেসোপটেমিয়ায় কিছু জমি কিনিয়াছি হে বার্তাবাহক শ্যালকপুত্র। শুনিয়াছি আগামীর জগত কনস্ট্রাকশনের জগত। চারিদিকে সেতু বাঁধ দালান রাজপথ নির্মাণ হইবে। তখন বাঁশের চাহিদা বিপুল বাড়িবে। তাই আগেভাগে ব্যবসার পথ সুগম করিতেছি।"<br />
<br />
আদম গিবরিলকে কহিল, "চল গিবরিল, শুনিলেই ত। চিন্তার কিছু নাই।"<br />
<br />
শয়তান পকেট হইতে একটি চশমা আর একটি ভার্নিয়ার ক্যালিপার্স বাহির করিয়া কহিল, "তিষ্ঠ আদম। আসিয়াই যখন পড়িয়াছ, তখন তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসখানা মাপিয়া লই।"<br />
<br />
আদম কহিল, "আমার গুহ্যদ্বারের ব্যাস মাপিয়া তুমি কী করিবে?"<br />
<br />
শয়তান সহাস্যে কহিল, "কৃষিকাজে প্রচুর তথ্য লাগে আদম। কয় মিলিমিটার বৃষ্টিপাত ঘটিবে, কয় কিলোমিটার বেগে হাওয়া চালাইবে, কত ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকিবে, আদমের গুহ্যদ্বারের ব্যাস কত ... এ সবই গুরুত্বপূর্ণ কৃষিতথ্য।"<br />
<br />
আদম স্কন্ধ ঝাঁকাইয়া কহিল, "বেশ, তোমার উপকারে লাগিলে মাপিয়া লও।" এই বলিয়া সে আপেলপত্রে কৌপীনখানি নামাইয়া সম্যক আয়োজন করিয়া দাঁড়াইল।<br />
<br />
শয়তান নিপুণ হস্তে আদমের গুহ্যদ্বারে ক্যালিপার্স প্রবিষ্ট করিয়া মাপজোক লইয়া খাগের কলম দিয়া প্যাপিরাসের চোথায় সকলই টুকিয়া রাখিল।<br />
<br />
আদম কহিল, "তোমার কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হইবে না তো হে শয়তান?"<br />
<br />
শয়তান মধুরঞ্জিত কণ্ঠে কহিল, "তোমার ক্ষতি হয়, এমন কোন কাজ শয়তান করিবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"<br />
<br />
গিবরিল ফিরিবার পথে আদমকে কহিল, "লক্ষণ ভাল ঠেকিতেছে না হে আদম। তুমি সাবধানে থাকিও।"<br />
<br />
আদম চটিয়া কহিল, "তুমি একটি নৈরাশ্যবাদী মূর্খ হে গিবরিল! শয়তান নিজেই কহিতেছে সে আমার কোন ক্ষতি করিবে না, আর তুমি তখন হইতে বকবক করিয়াই চলিতেছ! তোমার জ্বালায় শান্তিতে একটি বেলা নিরিবিলি গুপ্তকোষ পাঠ করিতে পারি না। যাও তুমি তোমার আপন কাজে!"<br />
<br />
গিবরিল হতাশ হইয়া উড়িয়া গেল।<br />
<br />
পরদিন গিবরিল আসিয়া সক্কাল সক্কাল পুনরায় আদমের দুয়ারে টোকা দিল। আদম দুই মিনিট পর হাঁপাইতে হাঁপাইতে আসিয়া কহিল, "কী বারতা কহ।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "সর্বনাশ ঘটিতে চলিতেছে আদম! শিগগীর আইস!"<br />
<br />
আদম কহিল, "আবার কী সর্বনাশ? মহাপ্লাবন ঘটিবে নাকি? নোয়ার নাওখানায় আলকাতরা মাখাইতে বল তোমার ঈশ্বর কর্তাকে।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "শয়তান তোমার বাঁশঝাড়ের বাঁশ কাটিতে শুরু করিয়াছে!"<br />
<br />
আদম বিরক্ত হইয়া কহিল, "চল দেখিয়া আসি।"<br />
<br />
কয়েক শত গজ পা চালাইয়া দুইজনে বাঁশঝাড়ের সমীপে আসিয়া দেখিল, শয়তান ও তাহার সাঙ্গোপাঙ্গোবৃন্দ মহোৎসাহে বংশ কর্তন করিতেছে। চারিদিকে স্তুপাকৃতি বংশকাণ্ড।<br />
<br />
আদম হাঁকিয়া কহিল, "সুপ্রভাত শয়তান! তোমার কৃষিকাজ দেখি ব্যাপক জোরেসোরে আগাইতেছে! ঘটনা কী?"<br />
<br />
শয়তান মুখ তুলিয়া দংষ্ট্রাকরাল এক হাসি উপহার দিয়া কহিল, "তা আগাইতেছে বটে! সামনে বাণিজ্যের মৌসুম। সময় থাকিতে বাঁশ কাঠ কাটিয়া গুছাইয়া রাখিতেছি। ঠিকাদারেরা দুইদিন পর চিলুবিলু করিয়া মক্ষিকার ন্যায় ছাঁকিয়া ধরিবে, দেখিও।"<br />
<br />
গিবরিল ফুঁসিয়া কহিল, "ঠিকাদারেরা কবে হইতে চোখা বাঁশ ফরমায়েশ করিতেছে?"<br />
<br />
শয়তান একটি দাও দিয়া বাঁশ ছাঁটিয়া অগ্রভাগ সূক্ষ্ম করিতেছিল, গিবরিলের প্রশ্ন শুনিয়া সে মিষ্টি হাসিয়া কহিল, "পেলব বাঁশ নির্মাণের কাজে কমই আসে ওহে হরকরার ছাও! আগেভাগে এক মাথা চোখা করিয়া মূল্য সংযোজন করিয়া রাখিতেছি।"<br />
<br />
আদম গিবরিলের পানে ফিরিয়া কহিল, "দেখিলে তো? চিন্তার কিছু নাই। কৃষিকাজ আর ব্যবসা চলিতেছে। চল আমরা যাই।"<br />
<br />
শয়তান গলা খাঁকরাইয়া কহিল, "ওহে আদম, আসিয়াই যখন পড়িয়াছ, তখন তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসখানি পুনরায় মাপাইয়া লইতে দিবে নাকি?"<br />
<br />
আদম বিস্মিত হইয়া কহিল, "গতকল্যই না এক দফা মাপিলে?"<br />
<br />
শয়তান সুমিষ্ট হাসিয়া কহিল, "কৃষিকাজে তথ্য হালনাগাদ রাখিতে হয় হে আদম। তাছাড়া গতকল্য তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাস আর আজিকে তোমার গুহ্যদ্বারের ব্যাসে যে আকাশ পাতাল ফারাক দেখা দিবে না, তাহা কে বলিতে পারে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "তা বেশ তো, তোমার উপকারে লাগিলে মাপিয়া লও।" এই বলিয়া সে কৌপীন উঁচু করিয়া সম্যক আয়োজন করিয়া দাঁড়াইল। শয়তান নিপুণ হস্তে ক্যালিপার্স প্রবিষ্ট করিয়া মাপজোক লইল। তাহার পর সেই ক্যালিপার্স দ্বারা হস্তধৃত বংশদণ্ডের সূক্ষ্ম প্রান্তটির অগ্রভাগে কী যেন মাপিতে লাগিল।<br />
<br />
আদম কহিল, "তোমার কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হইবে না তো হে শয়তান?"<br />
<br />
শয়তান নিক্কণমধুর কণ্ঠে কহিল, "তোমার অনিষ্ট হয়, এমন কোন কাজ শয়তান করিবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"<br />
<br />
গিবরিল ফিরিবার পথে আদমকে কহিল, "লক্ষণ ভাল ঠেকিতেছে না আদম। সাবধানে থাকিও!"<br />
<br />
আদম ক্ষেপিয়া কহিল, "তুমি সবকিছুতেই কেবল দুর্লক্ষণ দেখ হে গিবরিল! শয়তান নিজে কহিল সে আমার কোন অনিষ্ট করিবে না, আর তুমি সেই তখন হইতে ঘ্যানাইতেছ! যাও তুমি তোমার আপন কাজে, আমি বাড়ি গিয়া একটু শান্তিসহকারে বড়দের ব্যায়াম করি!"<br />
<br />
গিবরিল ব্যাজার হইয়া উড়িয়া গেল।<br />
<br />
পরদিন প্রত্যুষে আদমের কুটিরের দুয়ারে ঘা পড়িল। আদম দরজা খুলিয়া দেখিল, শয়তান দণ্ডায়মান। হাতে একটি সুতীক্ষ্ণ বংশদণ্ড। অদূরে দণ্ডায়মান গিবরিল।<br />
<br />
আদম কহিল, "কী ঘটনা শয়তান? বায়সও নিদ্রিত এখন, আর তুমি এইবেলা আমার বাড়িতে? বাঁধ ভাঙিয়া কোথাও মহাপ্লাবন ঘটিল নাকি? নোয়ার নাওখানার নোঙর উত্তোলন করিয়াছে নাকি কেউ?"<br />
<br />
শয়তান মধুর হাসিয়া কহিল, "কিছু তথ্য দরকার আদম। তুমি কি অনুগ্রহ করিয়া তোমার কৌপীন নামাইয়া তোমার গুহ্যদ্বারটি প্রস্ফূটিত করিয়া ঘুরিয়া দাঁড়াইবে কিয়ৎক্ষণের জন্য? আমি কিছু তথ্য লইয়াই প্রস্থান করিব, বেশি সময় লাগিবে না।"<br />
<br />
আদম কহিল, "তোমার এই কৃষিকাজে আমার কোন ক্ষতি হইবে না তো হে শয়তান?"<br />
<br />
শয়তান বীণাবিনিন্দিত মধুর কণ্ঠে কহিল, "তোমার ব্যথা লাগে, এমন কোন কাজ শয়তান করিবে না হে আদম। লিচ্চিন্তে থাক।"<br />
<br />
আদম কহিল, "তা বেশ তো, তোমার উপকারে যদি লাগে, আপত্তি কী?" এই বলিয়া সে কৌপীন খুলিয়া ঘুরিয়া সম্যক আয়োজন করিয়া দাঁড়াইল।<br />
<br />
গিবরিল নক্ষত্রবেগে উড়িতে উড়িতে ঈশ্বরের দরবারে গিয়া সিংহদ্বারে ঘা মারিতে মারিতে আর্তনাদ করিয়া কহিল, "জাঁহাপন, দরওয়াজা খুলুন! শয়তান আদমকে ধরিয়া পোন্দাইতেছে, আদমের কোনো হুঁশই নাই!"<br />
<br />
ঈশ্বর এক পেয়ালা চা হাতে প্রসন্ন বদনে দরজা খুলিয়া কহিলেন, "কী ব্যাপার গিবরিল, তুমি এই ফজরের ওয়াক্তে সক্রিয় যে?"<br />
<br />
গিবরিল সাশ্রুনয়নে কহিল, "শয়তান আদমকে পোন্দাইতেছে খোদাবন্দ! অথচ আদম ইহা অনুধাবনও করিতে পারিতেছে না! সে আপনা হইতেই কৌপীন খুলিয়া ঘুরিয়া দাঁড়াইতেছে প্রত্যহ!"<br />
<br />
ঈশ্বর সুমধুর হাসিয়া কহিলেন, "আমি কী করিব বল? ইহা তাহাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়!"<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-71545828283540415132011-11-17T17:04:00.000+06:002012-06-16T17:04:55.955+06:00আদমচরিত ০৪৭<br />
হ্রদের তীরে একটি মন্দসমীরণপুষ্পবিভূষণকোকিলকূজিত কুঞ্জের কোণে কদম্বতরুর দিকে চাহিয়া ঈশ্বর উলু দিয়া উঠিয়া কহিলেন, "কেউ কি একটি বাঁশি যোগাড় করিতে পার?"<br />
<br />
আদম গিবরিলের পঞ্জরে কনুই দ্বারা খোঁচা মারিয়া কহিল, "যাও হে দূত, তোমার ফরমায়েশ খাটিবার ওয়াক্ত নজদিক।"<br />
<br />
গিবরিল বিরস কণ্ঠে কহিল, "আমি শুধু বার্তা বহন করি ওহে আদম! বাঁশি সংগ্রহের কর্ম সে আমার নহে।"<br />
<br />
আদম আশেপাশে দৃকপাত করিয়া কহিল, "একটি পেল্লায় জ্ঞানবৃক্ষ আমার নাগালের বাহিরে রাখিয়া জ্ঞানলভ্যার্থে কেন ঈশ্বর আমাকে চীন দেশে লইয়া আসিলেন, বুঝিতেছি না। চীন দেশে কী এত জ্ঞান আছে শুনি?"<br />
<br />
কে এক স্বর্গদূত হাঁপাইতে হাঁপাইতে ঈশ্বরের স্যুটকেস হইতে একটি শিঙা বাহির করিয়া আনিয়া হাজির করিল।<br />
<br />
ঈশ্বর শিঙা হস্তে লইয়া বেজার হইয়া কহিলেন, "চাহিলাম বাঁশি, আনিলি শিঙা?"<br />
<br />
স্বর্গদূত মস্তক নমিত করিয়া কহিল, "বাঁশি তো নাই জাঁহাপন।"<br />
<br />
ঈশ্বর শিঙা হস্তে লইয়া উৎফুল্ল কণ্ঠে কহিলেন, "কই গিবরিল, কই আবুলিল, তোমরা নিকটে আইস। একটি দৌড় প্রতিযোগিতা হইয়া যাক। যে জিতিবে তাহাকে আমি মন্ত্রী বানাইব।"<br />
<br />
আদম গিবরিলের পিঠ চাপড়াইয়া দিয়া কহিল, "যাও হে গিবরিল, দেখ এ যাত্রা তোমার ললাটে মন্ত্রীত্বের শিকা ছিঁড়ে কি না।"<br />
<br />
আরেক প্রান্ত হইতে আবুলিল সহাস্যবদনে ভুঁড়ি দুলাইয়া আসিয়া হাজির হইল।<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আমি শিঙা বাজাইলেই তোমরা দুইজন দৌড় শুরু করিবে। যে সর্বাগ্রে ঐ কদম্বতরুটি হইতে একটি কদম আনিয়া আমার হস্তে সমর্পণ করিতে পারিবে, তাহাকে মন্ত্রী করিব।"<br />
<br />
গিবরিল গোমড়া মুখে কহিল, "আপনি ইস্রাফিলের শিঙা লইয়া কী করিতেছেন?"<br />
<br />
ঈশ্বর চমকাইয়া উঠিয়া শিঙাটি সাভিনিবেশে পরখ করিয়া কহিলেন, "বিষ্ঠা! ইস্রাফিলের শিঙাটি আমার লাগেজে পুরিয়াছে কোন মর্কট?"<br />
<br />
আদম ঊর্ধ্বনেত্র হইয়া শিস বাজাইতে লাগিল।<br />
<br />
ঈশ্বর সন্তর্পণে শিঙাটি বগলস্থ করিয়া কহিলেন, "বেশ, আমি হুইসেল বাজাইলেই দৌড় শুরু কর।"<br />
<br />
ঈশ্বর জিহ্বার নিচে অঙ্গুলি পুরিয়া শিস বাজাইতেই গিবরিল আর আবুলিল দৌড় শুরু করিল। আবুলিলের বিদ্যুৎগতি দেখিয়া সকলেই হতবাক হইয়া পড়িল। গিবরিলকে পশ্চাতে ফেলিয়া সে চক্ষের নিমেষে একটি কদম আনিয়া ঈশ্বরের হস্তে সমর্পণ করিল।<br />
<br />
গিবরিল হাঁপাইতে হাঁপাইতে ফিরিয়া আসিল, তাহার ললাটে স্বেদ।<br />
<br />
আদম তাজ্জব হইয়া কহিল, "এ কী করিয়া সম্ভব? তুমি না রশ্মি দ্বারা নির্মিত? তুমি আবুলিলের নিকট হারিয়া গেলে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ঐ শ্যালক নিউট্রিনো দ্বারা নির্মিত। কিঞ্চিৎ ভারি হইলেও সে আমার ফোটনগুলিকে হারাইয়া দিয়াছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর আবুলিলের কণ্ঠে মন্ত্রীমাল্য পরাইয়া দিলেন।<br />
<br />
আদম কহিল, "যাহ সালা, মজাই মাটি। ভাবিলাম ঈশ্বর বুড়বাকটি ইস্রাফিলের শিঙা বাজাইয়া দিলে বেশ একখানা প্রলয় দেখিতে পাইব, সেই সুযোগও পণ্ড হইল। ঐদিকে আবুলিলও মন্ত্রী হইল।"<br />
<br />
গিবরিল আবুলিলের পানে চাহিয়া উদাস কণ্ঠে কহিল, "প্রলয় কি শুধু শিঙা বাজাইলেই ঘটে রে আদম?"<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-66947003204900389612011-11-08T17:03:00.000+06:002012-06-16T17:03:59.900+06:00আদমচরিত ০৪৫<br />
ঈশ্বর গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "ব্যাপার কী আদম, এই প্রাতঃকালে তোমার এইরূপ উত্থিত দশা কেন? চুরি করিয়া নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণ কর নাই তো?"<br />
<br />
আদম গোঁ গোঁ করিয়া কহিল, "ঈভের জামাকাপড় ঠিক নাই।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "তাই বলিয়া তুমি এইরূপে তোমার শ্রীলঙ্কাটিকে বাগাইয়া চলাফিরা করিবে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "কী করিব? ঈভ তাহার নিকটে ঘেঁষিতে দেয় না। তাহার সহিত কোনক্রমেই কোন কিছু ঘটিবার নহে। তাহাকে যতই তেলআবিব দেই না কেন, সে একটি জেরুজালেম!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "তোমাকে দুই দুইটি হস্ত নির্মাণ করিয়া দিলাম আদম, বিপদে আপদে কার্যে প্রয়োগ করিতে।"<br />
<br />
আদম কহিল, "হস্ত পদ সকলই প্রয়োগ করিয়াছি প্রভু। উহাদিগের দিন শ্যাষ।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "এখন আমার দরবারে আসিয়াছ কী আবদার লইয়া?"<br />
<br />
আদম কহিল, "আপনি ঈভকে পর্দা করিতে বলুন।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "ঈভ তো বস্ত্র আচ্ছাদন সকলই প্রয়োজনীয় পরিমাণে করে বলিয়া জানি।"<br />
<br />
আদম কহিল, "উঁহু, তাহার বস্ত্র যথোচিত পরিমাণে নাই। খাটো কাঁচুলি পরিধান করিয়া সে তাহার তামিলনাড়ু দুটি ইচ্ছা করিয়াই প্রদর্শন করিয়া বেড়ায়। তাহার ঘাগড়াটিও তাহার বুন্দেলখণ্ডকে ঠিকমত আবৃত করে না।"<br />
<br />
ঈশ্বর কাশিয়া কহিলেন, "আচ্ছা ঠিকাছে। আমি ফরমান পাঠাইতেছি। ঈভ এক্ষণ হইতে তামিলনাড়ু ও বুন্দেলখণ্ড আবৃত করিয়া চলাফেরা করিবে।"<br />
<br />
দুইদিন পর আদম পুনরায় ঈশ্বরের দরবারে হানা দিল।<br />
<br />
ঈশ্বর আরশে বসিয়া অস্বস্তিভরে নড়িয়া চড়িয়া কহিলেন, "ব্যাপার কী আদম? তুমি তোমার এডিনবড়াটি পুনরায় এইরূপ বাগাইয়া আমার দরবারে আসিলে যে?"<br />
<br />
আদম গোঁ গোঁ করিয়া কহিল, "ঈভের জামাকাপড় ঠিক নাই প্রভু।"<br />
<br />
ঈশ্বর চক্ষু মুদিয়া কহিলেন, "আমি ঈভকে ফরমান পাঠাইয়া হুকুম দিয়াছি সে যেন তাহার তামিলনাড়ু ও বুন্দেলখন্ড ঢাকিয়াঢুকিয়া চলাফেরা করে। গবাক্ষে উঁকি দিয়া আমি দেখিয়াছি, ঈভ আমার কথা মান্য করিতেছে। তাহার তামিলনাড়ু ও বুন্দেলখন্ড যথোচিত পরিমাণে আবৃত।"<br />
<br />
আদম কহিল, "ঈভের নতুন বস্ত্রটি অত্যন্ত টাইট, জাঁহাপন! তাহার বস্ত্র তাহার তামিলনাড়ু ও বুন্দেলখণ্ডের উপর এমনরূপে আঁটিয়া থাকে যে আমি আমার নাগাসাকি নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিতেছি না, সে শুধু ফুকুশিমা হইবার উপক্রম করিতেছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "হস্ত পদের প্রয়োগে সুফল ঘটিতেছে না?"<br />
<br />
আদম গম্ভীর কণ্ঠে কহিল, "না!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "এখন কী করিব? আবদারখানা কী তোমার?"<br />
<br />
আদম কহিল, "ঈভ যেন এখন শিথিল ঢিলাঢালা বস্ত্রাদি পরিধান করে খোদাবন্দ!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "ঠিকাছে। আমি ফরমান পাঠাইতেছি। ঈভ এক্ষণ হইতে ঢোলা আলখাল্লা পরিয়া চলাফেরা করিবে।"<br />
<br />
দুইদিন পর আদম আবার ঈশ্বরের দরবারের দ্বারে ঘা মারিল। তবে হস্ত বা পদ দিয়া নহে।<br />
<br />
ঈশ্বর দরজা খুলিয়া আঁতকাইয়া উঠিয়া কহিলেন, "ছি ছি আদম, তুমি তোমার হণ্ডুরাসটি এইরূপে বাগাইয়া পুনর্বার আমার পবিত্র দরবারে আসিলে যে? দশজন দেখিলে কহিবে কী?"<br />
<br />
আদম গোঁ গোঁ করিয়া কহিল, "ঈভের জামাকাপড় ঠিক নাই মহাত্মন!"<br />
<br />
ঈশ্বর চটিয়া উঠিয়া কহিলেন, "ঠিক নাই মানে কী? আমি তো অলিন্দ হইতে দেখিলাম, ফরমান পাইবা মাত্র সে একটি ঢোলা আলখাল্লা পরিয়া বাজারে বরবটি দরদাম করিতেছে!"<br />
<br />
আদম কহিল, "উহার মুখ দেখা যায় জাঁহাপন।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "মুখ তো দেখা যাইবেই। মুখ দেখা না গেলে বুঝিবে কীরূপে যে এটি ঈভ?"<br />
<br />
আদম কহিল, "জাঁহাপন, আপনি কি মনিকালিউয়িনস্কিলের ঘটনা সম্পর্কে অবগত?"<br />
<br />
ঈশ্বর মাথা চুলকাইয়া কহিলেন, "উমমম, আচ্ছা, বটে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "হাঁ। কখনও কখনও মুখদর্শন করিলেও মোগাদিশু নিয়ন্ত্রণ কঠিন হইয়া পড়ে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আচ্ছা আমি ঈভকে ফরমান পাঠাইতেছি, সে মুখ ঢাকিয়া চলাফেরা করিবে।"<br />
<br />
দুইদিন পর আদম ঈশ্বরের দরবারে পুনরায় হানা দিল।<br />
<br />
ঈশ্বর ক্ষিপ্ত কণ্ঠে কহিলেন, "আদম, তোমার সমস্যা কী? তুমি আবার তোমার হাম্বানটোটা বাগাইয়া আমার দরবারে আসিলে যে?"<br />
<br />
আদম গোঁ গোঁ করিয়া কহিল, "ঈভের জামাকাপড় ঠিক নাই প্রভু!"<br />
<br />
ঈশ্বর হুঙ্কার দিয়া কহিলেন, "আবার কী সমস্যা তাহার জামাকাপড়ে? আমি তো দেখিলাম সে একটি বস্তায় ঢুকিয়া বুটের ডাল কিনিতে বাজারে আসিয়াছে!"<br />
<br />
আদম কহিল, "নন্দন কানন বড় বাত্যাপ্রবাহময় অঞ্চল প্রভু। বাতাসে ঈভের বস্তাটি তাহার অঙ্গে এইরূপে মাখিয়া যায় যে তাহার মেদিনীপুর ও রাওলপিণ্ডি দুটি পরিষ্কার ঠাহর করা যায়।"<br />
<br />
ঈশ্বর দন্ত কিড়মিড় করিয়া কহিলেন, "এখন কি নন্দন কাননে বাত্যাপ্রবাহ বন্ধ করিয়া দিবার আবদার লইয়া আসিয়াছ মর্কট?"<br />
<br />
আদম গম্ভীর কণ্ঠে কহিল, "না। আপনি ঈভকে একটি ইস্পাতের সিন্দুকে ঢুকিয়া চলাফিরা করিতে আদেশ দিন।"<br />
<br />
ঈশ্বর আরশের হেণ্ডুলে কীল মারিয়া কহিলেন, "ঠিকাছে! বলিতেছি! এইবার তোমার হনুলুলু নামাইয়া দূর হও!"<br />
<br />
দুইদিন পর আদম পুনরায় ঈশ্বরের দরবারে গিয়া দণ্ডায়মান হইল। উভয়ার্থেই।<br />
<br />
ঈশ্বরের চোয়াল ঝুলিয়া পড়িল। তিনি বিস্ফারিত নেত্রে আদমের পানে চাহিয়া কহিলেন, "তুমি কী ভক্ষণ কর বল দেখি? আবার তুমি তোমার লিভারপুল বাগাইয়া আমার দরবারে হাজির হইয়াছ?"<br />
<br />
আদম বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে কহিল, "ঈভের জামাকাপড় ... !"<br />
<br />
ঈশ্বর হুহুঙ্কারে কহিলেন, "ঠিক নাই? ইস্পাতের নিরেট সিন্দুকে তাহাকে ঢুকাইয়াছি, দুইটি স্বর্গদূত ঠ্যালাগাড়িতে করিয়া সেই সিন্দুক লইয়া বাহির হয়, তারপরও ঠিক নাই?"<br />
<br />
আদম গোঁ গোঁ করিয়া কহিল, "ইস্পাতের সিন্দুকটি বড় মনোহর!"<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-60214075682505659472011-11-01T17:01:00.000+06:002012-06-16T17:02:07.730+06:00আদমচরিত ০৪৬<br />
আদম পাড়ার চায়ের টংদোকানের সম্মুখে দাঁড়াইয়া একটি ভাঁড়ে করিয়া সুরুৎ সুরুৎ চা পান করিতে করিতে মুচকি হাসিতেছিল। গিবরিল ডানা ঝাপটাইয়া নামিয়া আসিয়া শুধাইল, "ভাই আদম, খাটাশের ন্যায় হাসিতেছ কেন?"<br />
<br />
আদম চক্ষু টিপিয়া কহিল, "ঈভকে এইবার এমন ইসকুরু টাইট দানের এন্তেজাম করিয়াছি ওহে গিবরিল, স্বয়ং ঈশ্বরও তাহাকে রক্ষা করিতে অপারগ।"<br />
<br />
গিবরিল হাঁক ছাড়িয়া এক ভাঁড় চায়ের অর্ডার দিয়া কহিল, "কী করিয়াছ? তাহার ইসকুরু তো যতদূর জানি বিলক্ষণ টাইট আছে, উহা শিথিল করিবার কোন সুযোগ তো তুমি পাও নাই!"<br />
<br />
আদম গলা খাঁকরাইয়া কহিল, "এইসব বাজে আলাপ করিবি নাকি কী করিয়াছি শুনিবি?"<br />
<br />
গিবরিল তপ্ত চায়ে চুমুক মারিয়া কহিল, "আচ্ছা বল শুনি।"<br />
<br />
আদম খিলখিল হাসিয়া কহিল, "গত বৎসর এই দিনে ঈভের দেহটিকে পৌরসভা ঘোষণা করিতে বিল আনিয়াছিলাম ঈশ্বরের দরবারে।"<br />
<br />
গিবরিল বিষম খাইয়া কহিল, "ঈভের শরীর পৌরসভা হয় কী করিয়া?"<br />
<br />
আদম মুহুহুহু হাসিয়া কহিল, "ঈশ্বর কি সব বিল পাঠ করিয়া দেখেন নাকি? বুঢ়া ভিসিপিতে দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে দেখিতেছিল, আমি বিল লইয়া ঘ্যানাইতেছিলাম বলিয়া বিরক্ত হইয়া কহিল, "কুন!" অমনি সব হইয়া গেল।"<br />
<br />
গিবরিল চায়ের কাপে চিন্তিত চুমুক দিয়া কহিল, "তারপর?"<br />
<br />
আদম কহিল, "পরদিন ঈভ পরওয়ানা পাইয়া ঈশ্বরের দরবারে গিয়া কলতলা ফাঁদিয়া বসিল। ঈশ্বর বিরক্ত হইয়া তাহাকে স্বীয় পৌরসভার চেয়ারপারসন বানা্ইয়া দিলেন।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তাতে তোমার কী লাভ?"<br />
<br />
আদম চক্ষু মুদিয়া কহিল, "চেয়ারপারসনের মেয়াদ এক বছর হে বেয়াকুক গিবরিল! গতকল্যই ছিল ঈভের চেয়ারপারসনপনার শেষ দিন!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "এখন কি পুনরায় নির্বাচন হইবে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "হাঁ! গণতন্ত্র মোতাবেক ঈভ এখন তামাদি। তাহার পৌরসভাটি উত্তমরূপে পরিচালনার জন্য প্রয়োজন এক জবরদস্ত ব্যক্তি, যে দৃঢ় মুষ্ঠিতে তাহার জোড়াসাঁকোকে টিপাইমুখ বানাইয়া ছাড়িবে!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "কবে নির্বাচন?"<br />
<br />
আদম চোখ টিপিয়া কহিল, "ঈশ্বর যাতে পুনরায় তাহাকে স্বীয় পৌরসভার চেয়ারপারসন নিয়োগ করিতে না পারেন, সেইজন্য আমি আজ সক্কাল সক্কাল তাহার পৌরসভাটিকে সিটি কর্পোরেশনে পরিণত করার বিল আনিয়াছি।"<br />
<br />
গিবরিল চক্ষু গোল করিয়া কহিল, "ঈশ্বর সেই বিল পাশ করিলেন?"<br />
<br />
আদম কহিল, "হাঁ। ফেসবুকে বসিয়া বসিয়া স্ট্যাটাস আপডেট করিতেছিলেন, রিলেশনশিপ ইট'স কমপ্লিকেটেড, আমি গিয়া বিল লইয়া ঘ্যানাইতে আরম্ভ করিবামাত্র পাশ করাইয়া দিলেন!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "অ! তা তোমার জন্য বার্তা আছে হে আদম। সব শুনিয়া বোধ করিতেছি, বার্তাটা সুখকর নহে।"<br />
<br />
আদম চায়ের ভাঁড় ছুঁড়িয়া ফেলিয়া কহিল, "আবার কী ঘটিল?"<br />
<br />
গিবরিল একটি প্যাপিরাস খুলিয়া নাসিকায় চশমা আঁটিয়া পড়িতে লাগিল। "ঈভের সিটি কর্পোরেশনটিকে তাহার সুপারিশ মোতাবেক দুই ভাগে ভাগ করা হইতেছে। তাহার শরীরের বামভাগ লইয়া ঈভ উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও দক্ষিণভাগ লইয়া ঈভ দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হইবেক। তাহার শরীরের মধ্যভাগের ত্রিকোণাকৃতির একটি অংশকে এই দুই সিটি কর্পোরেশনের মাঝে নো ম্যানস ল্যাণ্ড বলিয়া ঘোষণা করা হইল। এই আদেশ এক্ষণ হইতে কার্যকর হইবেক। স্বাক্ষর: ঈশ্বর, ৩৪/৪ নন্দন কানন, স্বর্গ ১০০০।"<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-26906757677304146472011-10-22T17:00:00.000+06:002012-06-16T17:02:49.587+06:00আদমচরিত ০৪৪<br />
ঊষাকালে নন্দন কানন নিঝুম নিস্তব্ধ থাকে। কাকপক্ষীও তখন নীড়ে কুণ্ডলী পাকাইয়া নিদ্রামগ্ন থাকে। আদম এই সময়েই প্রাতকৃত্য সারিতে গাড়ু হস্তে বাহির হয়। আশেপাশে নন্দন কাননের অপূর্ব সব বৃক্ষ ও ঝোপঝাড়, তারই কোন এক গহীন কন্দরে ঢুকিয়া সে কর্মসাধন করিয়া আসে। বেলা চড়িলে লোকজনের সমাগম বাড়ে, এবং তাহাদের ভিড়ে দুই-চারিটি পরিবেশবাদী সর্বদাই থাকিবে, যাহারা ঝোপেঝাড়ে বাগানক্রিয়া সারিতে দেখিলে হল্লাচিল্লা করে। একবার তো তাহারা পাপারাজ্জিতার সীমাহীন পরাকাষ্ঠা দেখাইতে পত্রিকায় আদমের বমাল চিত্র ছাপাইয়া দিয়াছিল।<br />
<br />
আজ ভোরে গাড়ু হাতে বাহির হইয়া আদম বোকা বনিল। বাটীর অদূরেই পৌর চত্বরে বিষম ভিড় দেখা যাইতেছে। কয়েকটি বাদাম ও চটপটিবিক্রেতা স্বর্গদূত সেই ভিড়ের উছিলায় চুটাইয়া ব্যবসা করিতেছে। আদম যোগবলে নিজের বিয়োগবেদনা দমন করিয়া গাড়ুটি পুনরায় অন্দরমহলে রাখিয়া আপেলপত্রটি ঠিকঠাক করিয়া সেই ভিড়ের দিকে আগাইয়া গেল। ঘটনা কী, জানা প্রয়োজন।<br />
<br />
কিছু উৎসুক স্বর্গদূতকে কনুইয়ের ঘায়ে পরাভূত করিয়া আদম ভিড় ঠেলিয়া আগাইয়া গেল।<br />
<br />
চত্বরের মাঝে দুইটি আসনে আয়েশ করিয়া নির্লিপ্তবদনে বসিয়া আছে আশরাফিল আর আবুলিল। তাহাদের অদূরেই ঘুরঘুর করিতেছে নিউটনিল। জুয়াড়ি সালমানিল ঘুরিয়া ঘুরিয়া ভিড় হইতে পয়সা তুলিতেছে। অদূরে সাপ্তাহিক চান্দের আলোর এক সাংবাদিক হাস্যমুখে উপস্থিত জনতার সাক্ষাৎকার লইতেছে।<br />
<br />
আদম ভিড়ের এক কোণায় গিবরিলকে দেখিতে পাইয়া আগাইয়া গেল।<br />
<br />
"ওহে গিবরিল, হইতেছে কী এইখানে?" আদম গিবরিলের হস্তধৃত ঠোঙা হইতে একটি বাদাম তুলিয়া দাঁতে কাটিয়া কহিল।<br />
<br />
গিবরিল উৎফুল্ল মুখে কহিল, "রেস চলিতেছে, দেখিতেছ না?"<br />
<br />
আদম গর্দান ঘুরাইয়া এইপাশ ওইপাশ দেখিয়া কহিল, "কই? কীসের রেস? কে দৌড়াইবে?"<br />
<br />
গিবরিল হাসিয়া কহিল, "এ দৌড়ের রেস নহে আদম, ইহা বসিবার রেস।"<br />
<br />
আদম ঘাবড়াইয়া কহিল, "এমনও রেস হয় নাকি?"<br />
<br />
গিবরিল ইশারায় নিউটনিলকে দেখাইয়া কহিল, "দেখিতেছ ইহাকে? নিউটনিল। দিবারাত্র জ্ঞানবৃক্ষের তলে বসিয়া বসিয়া ঝিমাইত হতভাগা। আচমকা একদিন জ্ঞানবৃক্ষের একটি ফল তাহার মস্তকে আসিয়া আছড়াইয়া পড়িবার পর সে বিপুল আক্কেল লাভ করিয়াছে। গণিত বল বিজ্ঞান বল সব কিছুতেই সে নানা তত্ত্ব ঝাড়িতেছে। অসিতকাষ্ঠ আর খড়ি ছাড়া কোথাও যায় না।"<br />
<br />
আদম দেখিল, নিউটনিল একটি অসিতকাষ্ঠে খড়ি দিয়া কী কী হিজিবিজি যেন দাগ কাটিতেছে।<br />
<br />
"কী বলিতে চায় সে?" আদম শুধাইল।<br />
<br />
গিবরিল বাদামের খোসা ছাড়াইতে ছাড়াইতে কহিল, "নিউটনিল দাবি করিতেছে, সে গতির তিনটি সূত্র আবিষ্কার করিয়াছে। তাহার প্রথমটি হইতেছে, বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হইলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকিবে।"<br />
<br />
আদম কহিল, "বটে? তা বাকি দুইটি সূত্র কী?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "বাকি দুইটি সূত্র এখনও ফাঁস করে নাই হতভাগা। কিন্তু প্রথম সূত্র দিয়াই সে বাজার জমাইয়া ফেলিয়াছে। ঐ যে দেখিতেছ সালমানিল? ঐ যে ফাটকা বাজারে ফটকেমো করিয়া বেড়ায়? সে আজ ভোরে আশরাফিল আর আবুলিলকে ধরিয়া আনিয়া রেসের আয়োজন করিয়াছে। বাজির পয়সা তুলিতেছে জনগণের নিকট হইতে, চাহিয়া দেখ।"<br />
<br />
আদম দেখিল, লোকজন ঘটিবাটী বেচিয়া পয়সা আনিয়া তুলিয়া দিতেছে সালমানিলের হাতে।<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "কে সবচে বেশিক্ষণ গদিতে বসিয়া থাকিতে পারিবে, ইহা লইয়া বাজি। কেহ ধরিতেছে আশরাফিলের উপর, কেহ ধরিতেছে আবুলিলের উপর।"<br />
<br />
আদম কহিল, "তুমি কাহার উপর ধরিলে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "এখনও ধরি নাই, বিবেচনা করিতেছি কাহার উপর ধরা যায়।"<br />
<br />
আদম কহিল, "আবুলিলের উপরেই ধর। খোদ ঈশ্বর উহাকে ঘাঁটাইতে সাহস পাইতেছেন না, তদুপরি শুনিয়াছি তাহার পশ্চাদ্দেশের ত্বক তক্ষকের ন্যায় সূক্ষ্ম রোমযুক্ত, যাহা ভ্যান ডের ওয়াল বল দ্বারা সংলগ্ন সমতলের অণুপরমাণুর সহিত চিপকাইয়া থাকে। আর নিউটনিল ত বলিতেছেই, বাহ্যিক বল প্রযুক্ত না হইলে স্থির বস্তু চিরকাল স্থির থাকিবে। আবুলিলের উপর বল খাটাইবার মত বলিষ্ঠ বলীবর্দ নন্দন কাননে নাই।"<br />
<br />
গিবরিল কিছু কহিল না, আনমনে দূরে সাপ্তাহিক চান্দের আলোর সাংবাদিকের দিকে আঙুল তুলিয়া শুধু হাসিল।<br />
<br />
আদম কিয়ৎক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিল, "রোসো, গাড়ুখানা কাঁসার দোকানে বেচিয়া কিছু পয়সা লইয়া আসি। আশরাফিলের উপর বাজি ধরিলে লস নাই।"Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-43356066328828816312011-10-21T16:56:00.000+06:002012-06-16T17:00:02.865+06:00আদমচরিত ০৩৯<br />
বিজ্ঞাপন দেখিয়া দরখাস্ত করিতে না করিতেই আদমের চাকরি জুটিয়া গেল।<br />
<br />
বিজ্ঞাপনে বলা ছিল, প্রার্থীকে অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন হইতে হইবে। শিক্ষাদীক্ষার পরিমাণ তেমন একটা না হইলেও চলে। কিন্তু প্রার্থীকে টিকিয়া থাকিবার ব্যাপারে পারদর্শী হইতে হইবে। তাহার চামড়াটি কিঞ্চিৎ পুরু হইলে ভাল। সর্বোপরি, গুরুজনের কথা মান্য করিতে হইবে। তনখা আলোচনাসাপেক্ষ।<br />
<br />
আদম গিবরিলের সহিত শলা করিয়া দরখাস্ত করিবার পরদিনই তাহার ডাক পড়িল।<br />
<br />
গিবরিল অবশ্য বলিয়াছিল, "ভাই আদম, এইখানে চাকরি করিলে কিন্তু তোমাকে প্রচুর গালি খাইতে হইবে। অচিরেই লোকে তোমাকে শাপান্ত বাপান্ত করিয়া আর কিছু অবশিষ্ট রাখিবে না। পথেঘাটে ধরিয়া চড়চটকনাও মারিয়া বসিতে পারে। ভাবিয়া দেখ।"<br />
<br />
আদম টুশকি মারিয়া এইসব উড়াইয়া দিয়া কহিল, "বলিলেই হইল?"<br />
<br />
সাক্ষাৎকারের ডাক আসিবার পর আদম তাহার সর্বাপেক্ষা উৎকৃষ্ট আপেলপত্রটি ইস্ত্রি করিয়া পরিধান করিল। অতঃপর ঊর্ধ্বাঙ্গে একটি টাই গ্রন্থি মারিয়া সে তাহার হবু কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করিল।<br />
<br />
কার্যালয়টি ছিমছাম। যে বিভাগে সে দরখাস্ত করিয়াছে, সে বিভাগের প্রধান আবলুশকৃষ্ণ এক স্বর্গদূত।<br />
<br />
নিজের শিক্ষাদীক্ষার বিবরণ দিতে আদমের বেশি সময় লাগিল না। সে হিয়েরোগ্লিফিক্স লিখিতে ও পড়িতে পারে। মাঝেমধ্যে বানান ভুল হয়, এই কথা আদম চাপিয়া গেল।<br />
<br />
পৃথিবী গোল নাকি সমতল, নন্দন কাননে নদী কয়টি, হঠাৎ মহাপ্লাবন দেখা দিলে কার সহিত যোগাযোগ করিতে হইবে, ইত্যাদি মামুলি প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে প্রদানের পর তাহার সাক্ষাৎকর্তা হস্ত বাড়াইয়া কহিলেন, "অভিনন্দন, আগামীকল্য হইতেই কাজ শুরু কর।"<br />
<br />
আদম কহিল, "কাজটি কী?"<br />
<br />
সাক্ষাৎকর্তা কহিলেন, "কাজ অতি সহজ। আমাদের বিভাগে আমরা শুধু দুইজন ক্রীড়াবিদকে লইয়া বৎসরভর মাতিয়া থাকি। আফ্রিদিল ও আশরাফিল। আফ্রিদিলকে আমি ডিল করিব, তুমি আশরাফিলকে দেখ।"<br />
<br />
আদম কহিল, "আশরাফিলকে লইয়া কী করিতে হইবে?"<br />
<br />
সাক্ষাৎকর্তা হাসিয়া কহিলেন, "বেশি কিছু নহে। সে যদি দলে থাকে, তাহলে অবধারিতভাবেই সে দুই তিন রান করিয়া প্যাভিলিয়নে ফিরিবে। এইসব চাপিয়া গিয়া তাহার অতীত বীরত্ব লইয়া তোমাকে লিখিতে হইবে। গত শতাব্দীতে সে কবে এক বিষ্যুদবার ছক্কা হাঁকাইয়াছিল, তাহার মর্মান্তিক একটি বিবরণের চোথা ফাইলে আছে, উহাই ঘুরাইয়া ফিরিয়া কপি মারিবে। আর যদি সে দলে না থাকে, তাহা হইলে তোমার খাটনি বাড়িবে। তখন কেন সে দলে নাই, ইহা লইয়া কাঁদিয়া মাটিতে গড়াগড়ি দিয়া প্রবন্ধ ফাঁদিতে হইবে। সেইসাথে দলের ভিতরে তাহার সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী যাহারা আছে, তাহাদের পোন্দাইয়া ছত্রাখান করিতে হইবে। বিশেষ করিয়া রকিবিল আর সাকিবিল, এই দুই পাপিষ্ঠের পশ্চাদ্দেশ একেবারে ছিটমহল বানাইয়া ছাড়িতে হইবে।"<br />
<br />
আদম কহিল, "আফ্রিদিলকে পোন্দাইব না?"'<br />
<br />
সাক্ষাৎকর্তা মধুর হাসিয়া কহিলেন, "আফ্রিদিলের সহিত পোন্দাপুন্দির ব্যাপারখানা আমিই সামলাইব, তুমি আশরাফিলে মনোনিবেশ কর।"<br />
<br />
আদম কহিল, "তথাস্তু, উটপোঁদশুভ্রিলদা!"<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-48823771161145263192011-10-20T08:30:00.000+06:002011-10-20T08:37:03.117+06:00আদমচরিত ০৩৮<br />
আদম চটিয়া কহিল, "টাকা নাই মানে? টাকার অভাবে একলা থাকিব?"<br />
<br />
ঈশ্বর কাশিয়া কহিলেন, "দেখ আদম, স্বর্গের কোষাগারে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা নাই। যা ছিল সব বিরোধী দলের স্বর্গদূতেরা মারিয়া কাটিয়া লুটিয়া পাচার করিয়াছে। কিয়ৎকাল ধৈর্য ধর। সুমায়ে সুনা ফলে।"<br />
<br />
আদম ঘ্যানাইতে লাগিল, "বহুকাল ধৈর্য ধরিয়াছি। শুধু ধৈর্যই নহে, আরও অনেক কিছু ধরিয়াছি। বামহাতের হস্তরেখা প্রায় বিলীন হইয়া গিয়াছে একাকী ধৈর্য আর অনেক কিছু ধরিতে ধরিতে। সুনা ফলিয়াছে, আপনি যথাশীঘ্র সম্ভব অর্থের সংস্থান করিয়া আমাকে একটি ঈভ নির্মাণ করিয়া দিন।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আহারে বাছা ইহা ত মোদক নহে যে তুমি আবদার করিবে আর আনিয়া দিব। বিশেষজ্ঞদের মতামত লইতে হয়। তাহারা একেকজন একেক কথা বলিতেছে। কেহ বলিতেছে ঈভ নির্মাণ না করিয়া বরং তোমাকে একটি পেলাসটিকের পুতুল কিনিয়া দিতে। কেহ কহিতেছে আদমের আবার স্ত্রী কী, বেশি লম্ফঝম্ফ করিলে ধরিয়া খোজা করিয়া দিন। কেহ কহিতেছে তোমাকে আরও দুইটি বাম হস্ত সৃজন করিয়া দিতে। শিমুল তুলার কোলবালিশও বিকল্প হিসেবে প্রস্তাব করিতেছে কেহ কেহ। নানা মুনির নানা মত। মাঝখানে তুমি আসিয়া ফট করিয়া ঈভ নির্মাণ করিতে বলিলেই তো হবে না।"<br />
<br />
আদম চক্ষু রাঙাইয়া কহিল, "আপনি এই কহিতেছেন কোষাগারে টাকা নাই, আবার পরক্ষণেই নানা মুনির ঘাড়ে মতের বস্তা চাপাইতেছেন! আপনার মতলব ত সুবিধার ঠেকিতেছে না খোদাবন্দ!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "অনেক হইয়াছে, এইবার যা পালা! ফলমূল পাড়িয়া কিছু আহার কর। আমি দেখি কী ব্যবস্থা করা যায়। আর খবরদার নিষিদ্ধ ফলের বৃক্ষের আশপাশে গমন করিবি না। যদি শুনি ঐদিকে পা বাড়াইয়াছিস, ঈভ তো পাবিই না, ডিংডংখানিও দুই আঙুল কর্তন করিয়া লইব! আমি বিশেষজ্ঞদের সহিত আলাপ মারিয়া দেখি তারা আবার কী কহে।"<br />
<br />
আদম মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে দরবার হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া কহিল, "রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।"<br />
<br />
বিশেষজ্ঞদিগের সহিত আলাপ সারিয়া ঈশ্বর আদমকে পুনরায় ডাকিয়া পাঠাইলেন।<br />
<br />
আদম সাগ্রহে শুধাইল, "টাকাকড়ি কি যোগাড় হইল জাঁহাপন? কবে নাগাদ ঈভ পাইতেছি?"<br />
<br />
ঈশ্বর গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "বিমানিলের সহিত আলাপ করিলাম। বিমানিল মৃত্তিকা হইতে ঈভ সৃজনে আপত্তি জানাইয়াছে। মৃত্তিকা হইতে ঈভ সৃজিলে তাহার উড্ডয়নে ব্যাপক বিঘ্ন ঘটিবে বলিতেছে সে।"<br />
<br />
আদম কহিল, "ঈভের সহিত উড্ডয়নের কী সম্পর্ক?"<br />
<br />
ঈশ্বর স্কন্ধ ঝাঁকাইয়া কহিলেন, "আমি কি অত কিছু জানি নাকি রে বাপু? ঈশ্বর হইয়া কী ফ্যাসাদে পড়িলাম, সকলে খালি সকলকিছুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা মাগিয়া বসে! বিজ্ঞান চাস তো রিচার্ড ডকিন্সের কাছে গিয়া প্রশ্ন কর হতভাগা, ঈভের সহিত উড্ডয়নের কী সম্পর্ক! আর একখানা ঈভ বলিস বিবর্তনের মাধ্যমে শাখামৃগ হইতে সৃজিয়া দেখাইতে! আমার নিকট ঈভ মাঙিলে এইসব বিজ্ঞানটিজ্ঞান চলিবে না বলিয়া দিলাম!"<br />
<br />
আদম কহিল, "বিমানিল কহিল, আর আপনি শুনিলেন?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "হাঁ। ঈশ্বর হইলে অনেক কিছু শুনিতে হয়। বিমানিল, জাহাজিল, বন্দুকিল, সবার কথার মূল্য দিতে হয়। আরশে তো অধিষ্ঠান কর নাই বাপু, তাই তাল পাও না। স্বর্গ পরিচালনা বহুৎ কঠিন কর্ম, হুঁহুঁ!"<br />
<br />
আদম দরবারের মেঝেতে পা ঠুকিয়া কহিল, "তাহলে আমি কীরূপে ঈভ পাইব?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "দাতা সংস্থার জাপানিলকে বলিয়াছি, বিকল্প হিসেবে তোমার একটি পঞ্জরাস্থি হইতে ঈভ সৃজন করা হইবে। তাহারা এই প্রস্তাব পাশ করিলে অর্থ সংস্থান করিবে, তাহার পর তোমার অপারেশন।"<br />
<br />
আদম দুই পা পিছাইয়া গিয়া কহিল, "আমার পঞ্জরাস্থি হইতে মানে? আমার হাড্ডি কাড়িয়া ঈভ বানাইবেন নাকি?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "হাঁ, সমস্যা কোথায়? একটি হাড্ডিই ত? পঞ্জরের হাড্ডি ধৌত করিয়া কি মাধ্বিক পান করিবি নাকি?"<br />
<br />
আদম হাপুস কাঁদিয়া কহিল, "আমার এত সুন্দর দেহ, কাটিয়া কুটিয়া নষ্ট করিবেন? লুই কানের ডিজাইন করা শইলডা আমার ...!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "এইসব কোনো ব্যাপার নহে আদম, ঈভ চাহ নাকি চাহ না?"<br />
<br />
আদম হাপুস কাঁদিতে লাগিল।<br />
<br />
এমন সময় বাহিরে মৃদু গুঞ্জরণের শব্দ দরবারে ভাসিয়া আসিল। ঈশ্বর অলিন্দে উঁকি দিয়া কহিলেন, "আ মোলো যা, এ যে দেখছি সত্যাগ্রহী মক্সুদিল আর তার অহিংস সভা! আমার দরবারের সামনে কী চায় হতভাগা?"<br />
<br />
আদম আগাইয়া গিয়া কহিল, "এই ঠা ঠা গরমে এই খদ্দরের চাদর গায়ে কী চাহিতেছে মক্সুদিল?"<br />
<br />
ঈশ্বর গিবরিলকে তলব করিয়া কহিলেন, "যা তো, গিয়া শুনিয়া আয়, বেটা কী চাহিতেছে এইবেলা!"<br />
<br />
গিবরিল উড়িয়া গিয়া সব খবর লইয়া ফিরিয়া কহিল, "হুজুর, স্বর্গগান্ধী মক্সুদিল অনশন শুরু করিয়াছে। লাঞ্চের আগ পর্যন্ত অনশন চালাইবে বলিয়া হুমকি দিতেছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর বিরক্ত হইয়া কহিলেন, "কেন, আবার কী ঘটিল?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ঈভ নির্মাণের প্রতিবাদে অনশন চলিতেছে জাঁহাপন!"<br />
<br />
আদম তড়াক করিয়া লাফাইয়া উঠিয়া কহিল, "ঈভ নির্মাণের প্রতিবাদ মানে? ঈভ নির্মাণ করিলে মক্সুদিলের কী সমস্যা?"<br />
<br />
গিবরিল নোটবই বাহির করিয়া পৃষ্ঠা উল্টাইয়া কহিল, "হাঁ, এই তো যুক্তি দিয়াছে ... মোক্ষম প্রশ্ন! ঈভ নির্মাণ হইলে তাহা ভুরুঙ্গামারীর কী কাজে লাগিবে?"<br />
<br />
<br />
<hr />
<br />
আদমচরিতের <a href="http://draft.blogger.com/url=http://www.facebook.com/pages/%E0%A6%86%E0%A6%A6%E0%A6%AE%E0%A6%9A%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A4/162158033876589">একটি ফেসবুক পৃষ্ঠা</a> খুলিয়াছি। পাঠকেরা দলে দলে যোগদান মারুন।<br />
<div>
<br /></div>Unknownnoreply@blogger.com2tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-6646043698639965222011-10-18T08:39:00.000+06:002011-10-20T08:40:15.281+06:00আদমচরিত ০৪০<br />
ঈশ্বর মঞ্চে বসিয়া বসিয়া বিরক্ত মুখে পাতি স্বর্গদূত নেতাদিগের বক্তৃতা শুনিতেছিলেন। ইহারা কর্মে পটু না হইলেও মুখের জোরে একেকটি গগ ও মাগগ। হাতের নাগালে মাইক ঠেকিলেই ইহারা অগ্রপশ্চাৎ জ্ঞান হারাইয়া আসুরিক শক্তিতে আর্তনাদ করিতে থাকে। মাইক ছাড়াই ইহাদের আওয়াজ সায়হুনের তীর হইতে ফোরাতের পূর্ব পার পর্যন্ত পৌঁছিবে। ইহারা খায় কী?<br />
<br />
আন্দালিবিল নামক স্বর্গদূতটি সম্ভবত কোকেন টানিয়া আসিয়াছে, সে বুকের ছাতিতে কীল মারিতে মারিতে চেঁচাইতেছে, "মাননীয় ঈশ্বর, নির্বাচনে জয় লাভ করিলে আদমকে ধরিয়া বান্ধিয়া পোন্দাইতে হইবে, যেইরূপে সে আমাদিগকে বান্ধিয়া পোন্দাইবার ষড়যন্ত্র করিতেছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর দীর্ঘশ্বাস ফেলিলেন। ইহারা হইবে ভবিষ্যতের নেতা? শুধু পোন্দাপুন্দি করিবার দিকে ঝোঁক। এইসব বদভ্যাস ইহারা কোন স্থলে বসিয়া শিখিয়াছে কে জানে? স্বর্গেও যদি সদম উল্টাইতে হয়, ক্যাম্নেকী?<br />
<br />
শরীক দলের আলবদরিল নামক এক নারকী নেতা মঞ্চে উঠিয়া হুহুঙ্কারে বলিল, "বিচার? কীসের বিচার? হিতাহিতের বিচার করেন কে? করেন হীরকরাজ! হুঁশিয়ার আদম, পোন্দানির হাত হইতে তোমার নিস্তার নাই!"<br />
<br />
ঈশ্বর পুনরায় দীর্ঘশ্বাস ফেলিলেন। শরীক দলের বড়বড় নারকীগুলি আদমের আক্রমণে বন্দী হইয়াছে, কোনো এক নহরের পাশে তাহাদিগকে খর্জুরবৃক্ষের সহিত রজ্জুবদ্ধ করিয়া রাখিয়াছে হতভাগা আদম। সত্যই সে এইসব নারকীদিগকে পোন্দাইতেছে কি না, বলা শক্ত। কিন্তু নারকীরা দাবি করিতেছে, আদম তাহাদের নেতাদের পোন্দাইয়া কোন কিছু অবশিষ্ট রাখে নাই। ঈভের সংসর্গ না পাইয়া নাকি আদম বিগড়াইয়া গিয়াছে, সে আর বাছাবাছি করে না, নগদ যা পায় হাত পাতিয়া লয়। স্বর্গদূত নেতা ইলিয়াসিল সদমধ্বংসের ন্যায় আদমধ্বংসের দাবি জানাইয়া আসিতেছে বৎসরাধিক কালব্যাপী।<br />
<br />
সকল পাতিনেতার বক্তৃতা শেষ হইবার পর ঈশ্বর মঞ্চে উঠিয়া ক্ষমতার খন্তাটি উঁচাইয়া ধরিতেই জনতা হর্ষধ্বনি করিয়া উঠিল। ঈশ্বর জেব হইতে আয়না বাহির করিয়া নিজের কবরীগ্রন্থিটি ঠিক করিলেন, অতঃপর একটি রশ্মিরোধী পরকলা পরিধান করিলেন। তাহার পর কহিলেন, "মা কসম ঠাকুর, আগামীবার ক্ষমতায় গিয়া ক্ষমতা নতুন নেতাদিগের হস্তে সমর্পণ করিব।"<br />
<br />
উপস্থিত স্বর্গদূতেরা এই কথা শুনিয়া বিস্ময়ে বিমূঢ় হইয়া পড়িল। তাহারা নিজেদের কানে ফিসফাস করিতে লাগিল। ঈশ্বরের পরিবর্তে নতুন নেতার হাতে ক্ষমতা পড়িবে? আন্দালিবিল, আলবদরিলরা নন্দন কাননের মন্ত্রী হইবে? ইহারা ত পোন্দাপুন্দিকেই রাজনীতি মনে করে!<br />
<br />
ঈশ্বর উপস্থিত স্বর্গদূতদের মনোভাব বুঝিয়া হস্তধৃত খন্তাটি পুনরায় উঁচাইয়া ধরিলেন। সভাস্থলে আবার পিনপতন নিস্তব্ধতা নামিল।<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "না, তোমরা দুশ্চিন্তা করিও না। আমি উপযুক্ত হস্তেই ক্ষমতা অর্পণ করিব।"<br />
<br />
উপস্থিত স্বর্গজনতা উসখুস করিতে লাগিল।<br />
<br />
ঈশ্বর গিবরিলকে ডাকিয়া বলিলেন, "যাও, বান্দরটিকে ফুলের মালা দিয়া বরণ করিয়া আন।"<br />
<br />
গিবরিল মঞ্চের পিছন হইতে একটি গোদা বিবাগী শাখামৃগের কণ্ঠে বরণমাল্য পরাইয়া তাহাকে ক্রোড়ে করিয়া ফিরিল।<br />
<br />
ঈশ্বর পরম স্নেহভরে ক্ষমতার খন্তাটি সেই বান্দরের হাতে তুলিয়া দিয়া নিজের আসনে ফিরিয়া গেলেন। রাজনীতি বড় পরিশ্রমের কর্ম, গৃহে ফিরিয়া জাকুজিতে এক ঘন্টা না কাটাইলেই নয়।<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-66466647558262790222011-10-14T08:41:00.000+06:002011-10-20T08:42:00.797+06:00আদমচরিত ০৩৬<br />
স্বর্গে প্রমত্তা জায়হুন নদীর তীরে ঈশ্বর বিরক্তমুখে পায়চারি করিতেছেন। অদূরে আদম উদাস মুখে বসিয়া বসিয়া বাদাম চিবাইতেছে। গিবরিল ঈশ্বরের পিছু পিছু সম্মানজনক দূরত্ব বজায় রাখিয়া ডানা ঝাপটাইয়া বাতাস করিতেছে।<br />
<br />
ঈশ্বর অস্ফূটে কহিলেন, "ফেরিঘাটে দাঁড়াইয়া দাঁড়াইয়া ঠ্যাং দুটি ব্যথা হইয়া গেল!"<br />
<br />
আদম হেঁড়ে গলায় গান ধরিল, "জায়হুন-ঢেউ রে এ এ এ, মোর শূন্য হৃদয় জায়হুন নিয়ে যা, যা রে ...।"<br />
<br />
গিবরিল গলা খাঁকরাইয়া কহিল, "জাঁহাপন, জায়হুন নদীর উপর একটি সাঁকো নির্মাণ করিলেই তো আর ফেরির জন্য অপেক্ষা করিতে হয় না।"<br />
<br />
ঈশ্বর চক্ষু রাঙাইয়া কহিলেন, "তুমি কি ভাবিয়াছ, সেই চেষ্টা আমি করি নাই?"<br />
<br />
গিবরিল থতমত খাইয়া কহিল, "ইয়ে, কবে করিয়াছিলেন খোদাবন্দ?"<br />
<br />
ঈশ্বর হাতের অঙ্গুলি মটকাইয়া কহিলেন, "বহুকাল পূর্বে।"<br />
<br />
গিবরিল জায়হুনের দিকে চাহিয়া তাহার অপর তীর অবলোকনের চেষ্টায় ক্ষান্ত দিয়া কহিল, "সাঁকোটির কী ঘটিল?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "সাঁকো নির্মাণের জন্য আমি সকল ব্যবস্থাই লইয়াছিলাম। জমি অধিগ্রহণ করিতে গিয়া কতগুলি স্বর্গদূতের পিছনে মিছি মিছি সহস্র স্বর্গমুদ্রা বাহির হইয়া গেল। হতভাগার দল সাঁকোর খবর শুনিবামাত্র আদাড়েবাদাড়ে জলেজঙ্গলে ঝোপেঝাড়ে সস্তায় জমি কিনিয়া রাখিয়াছে, অধিগ্রহণ করিতে গিয়া অগ্নিমূল্যে সেইসব জমি কিনিতে হইয়াছে।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ততঃকিম?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "প্রকল্পে অযুত সংখ্যক স্বর্গদূতকে নিয়োগ করিয়াছিলাম, তাহাদিগের মাহিনা বাবদ আরও সহস্রমুদ্রা বাহির হইয়া গেল।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ততঃকিম?"<br />
<br />
ঈশ্বর সরোষে কহিলেন, "প্রকল্পের দায়িত্ব দিয়াছিলাম হতভাগা আবুলাইলের স্কন্ধে, সে নিজেই গোপনে কম্পানি খুলিয়া টেন্ডারে সূক্ষ্ম হইতে স্থূল, বিভিন্ন দাগের চুরিচামারি শুরু করিয়াছিল।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ততঃকিম?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "প্রকল্পের অর্থ তো আর বলীবর্দের মার্গ দিয়া বাহির হয় না রে গিবরিল, তাহা আমার কোষাগার হইতেই সংগ্রহ করা লাগে। কোষাগারের সব টাকা সাঁকোর পিছনে খরচ হইয়া গেল, তখন ঐ মাড়োয়ারি স্বর্গদূত বিশ্বরাম ব্যাঙ্কওয়ালার কাছে অর্থ মাগিতে হইল।"<br />
<br />
গিবরিল শিহরিত হইয়া কহিল, "সর্বনাশ, ঐ মেড়ো?"<br />
<br />
ঈশ্বর হাতের তালুতে মুষ্ঠ্যাঘাত করিয়া কহিলেন, "বিশ্বরাম ব্যাঙ্কওয়ালা একদিন আসিয়া আমার দরবারে দাঁড়াইয়া মুখের উপর কহিল, আবুলাইল একটি তস্কর! আবুলাইলকে কর্ণে ধরিয়া বাহির না করিলে সে আর প্রকল্পে অর্থ দিবে না।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "অতঃপর আপনি আবুলাইলকে কর্ণে ধরিয়া বহিষ্কার করিলেন?"<br />
<br />
ঈশ্বর বিষণ্ণ হইয়া কহিলেন, "না, আবুলাইলকে বহিষ্কার করা কি আর আমার হাতে আছে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ততঃকিম?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আর কী? অর্থের সংস্থান আর হইল না। প্রকল্পটি পায়ুমারা খাইয়া বসিয়া গেল। অধিগ্রহণ করা জমি বেদখল হইয়া গেল। আজও তাই ফেরিতে চড়িয়া জায়হুন পাড়ি দিতে হয়।"<br />
<br />
গিবরিল রুদ্ধশ্বাসে কহিল, "আবুলাইলের ললাটে কী ঘটিল?"<br />
<br />
আদম হেঁড়ে গলায় গাহিয়া উঠিল, "সে প্রেমের ঘাটে ঘাটে বাঁশি বাজাআআআআআয় ...।"<br />
<br />
ঈশ্বর নাকের পাটা ফুলাইয়া কহিলেন, "হতভাগার চামড়া ছাড়াইয়া নতুন এক প্রকার জন্তু নির্মাণ করিয়াছি। ঠিক করিয়াছি ইহাকে গণ্ডার বলিয়া ডাকিব।"<br />
<div>
<br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-61061928103045262542011-10-11T08:42:00.000+06:002011-10-20T08:42:36.210+06:00খচাৎ<br />
আবদুলের নামটি তাহার পিতামহ যথার্থই রাখিয়াছিলেন। তাহার নিয়তিতে যে বেদুইনের দেশে দাসত্বই প্রকটাক্ষরে লিখিত ছিল, তাহা মুরুব্বিগণ পাঠ করিতে না পারিলে কে পারিবে?<br />
<br />
অতএব কোনো এক হেমন্তের রাতে কৃষিজমি বন্ধক রাখিয়া অর্জিত অর্থ দালালের হস্তে সমর্পিয়া বেদুইনের দেশগামী একটি জাহাজে চড়িয়া বসিল আবদুল। বেদুইন বন্দর বালছালাহ বরাবর সেই পোতের নাক ঘুরিবার সময় আকাশের শুকতারা আবদুলের দিকে চাহিয়া চক্ষু মিটমিট করিল। আনপঢ় আবদুল নক্ষত্র বা বেদুইন, উভয়ের ভাষায় সমান অদক্ষ, কাজেই সে মজবুত করিয়া গলুইয়ের একাংশ ধরিয়া যাত্রাকাল পার করিবার এন্তেজাম করিল শুধু। শুকতারা দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া পাশ ফিরিয়া শুইল।<br />
<br />
বালছালাহতে পদার্পণ করিবার পর আবদুলের কাগজপত্র দেখিয়া তাহার নিয়োগকর্তা তাহাকে ধরিয়া একটি উষ্ট্রচালিত শকটে খেদাইয়া তুলিল আরো কয়েকজন কর্মীর সহিত। তারপর সেই শকট মরুর বুক চিরিয়া চলিতে লাগিল, গন্তব্য মরুর বুকে কোনো এক মরুদ্যান শহর আল-গোমারাহ।<br />
<br />
আল গোমারাহে পৌঁছিতে না পৌঁছিতেই আবদুলের নিয়োগকর্তা একটি পাজন হস্তে সকল কর্মীকে ব্যাপক হুড়া লাগাইলেন। রাখালতাড়িত ছাগের ন্যায় ছুটিতে ছুটিতে তাহারা একটি বাথানে ঢুকিয়া পড়িল। সেইখানে একপাশে ভেড়ার খোঁয়াড়, খোঁয়াড়ের এক কোণে ভেড়ার রাখালের খোঁয়াড়, তারই একটি সংকীর্ণ শয্যায় আবদুলের স্থান হইল। নিয়োগকর্তা একটি খর্জুরের রুটি আর একটি মৃৎপাত্রে পানি দিয়া আকারে ইঙ্গিতে তাহাদের দায়িত্ব এবং হাতের পাজন তুলিয়া প্রত্যেকের কুক্ষিদেশে গুতা মারিয়া সেই দায়িত্ব পালনে অপারগতার শাস্তি বুঝাইয়া দিয়া কাটিয়া পড়িলেন।<br />
<br />
সেই হইতে আবদুল ভোর হইতে সন্ধ্যা পর্যন্ত দূর পাহাড়ের উপত্যকায় ভেড়ার পাল চরাইতে লইয়া যায়। তাহার কাগজপত্র সবই নিয়োগকর্তার হাতে জব্দ। তনখা যত মিলিবে বলিয়া তাহাকে দেশীয় দালাল আশ্বাস দিয়াছিলো, তাহার দশমাংশও মিলে না, খানা-বিছানা বাবদ টাকা কাটিয়া তাহার হাতে যা আসে তাহা দেশে পাঠানোর জন্য শহর অব্দি গমনের রাহাখরচার জন্যও যথেষ্ট নহে।<br />
<br />
কিন্তু আবদুল জ্বলিয়া পুড়িয়া ছারখার হইলেও মস্তক নত করিবার নহে। সে ভেড়া চরাইতে চরাইতে ভেড়া হইতেও অধিক ভেড়ার ন্যায় জীবন কাটাইতে লাগিল।<br />
<br />
কিন্তু তাহার বিধি বাসদের ন্যায় বাম। একদিন খোঁয়াড়ে একটি গড্ডলশিশুর হিসাবে গড়বড় হইয়া গেল। মালিক আসিয়া তদন্ত ঢুঁড়িয়া বাহির করিলেন, সুদূর উপত্যকায় কে বা কাহারা একটি গড্ডলশিশু জবেহ করিয়া বারবিকিউ সাঁটাইয়াছে। তিনি বেদুইনের জবানিতে একটি হ্রস্ব বক্তৃতা দিলেন, আবদুল তাহার বিন্দু বিসর্গও বুঝিল না। কিন্তু বক্তৃতা শেষে তিনি আবদুলের বামকর্ণটিই পাকড়াইয়া স্থানীয় কাজীর কাছে লইয়া গেলেন।<br />
<br />
কাজী ঈশ্বরের কানুন ঘাঁটিয়া বলিলেন, ইহার একটি হস্ত কর্তন করা হৌক।<br />
<br />
আবদুল কিছু বুঝিবার পূর্বেই তাহার একটি হস্ত ঈশ্বরের ইচ্ছায় কাটা পড়িল।<br />
<br />
কিন্তু সকলই ললাটলিখন মনে করিয়া অবশিষ্ট হাতেই আবদুল ভেড়া চরাইতে লাগিল, আর ভাবিল, দেশে ফিরিবার জাহাজমাশুল যোগাড় করিতে পারিলে সে গৃহের সন্তান গৃহে ফিরিবে।<br />
<br />
কিন্তু বাসদের ন্যায় বামাচারী বিধি পুনরায় আবদুলের উপর চড়াও হইল। নিয়োগকর্তার গৃহে জনৈকা পরিচারিকা গর্ভবতী হইয়া পড়িবার পর সে পুনরায় বাথানে আসিয়া বক্তিমা মারিল। তারপর আবদুলের কর্ণটি পুনরায় পাকড়াইয়া পূর্বোক্ত কাজীর নিকট তাহাকে দাখিল করিল।<br />
<br />
কাজী ঈশ্বরের কানুন ঘাঁটিয়া বলিলেন, ইহার ডিংডংটি কর্তন করা হৌক।<br />
<br />
আবদুল কিছু বুঝিবার পূর্বেই তাহার ডিংডং ঈশ্বরের অভিলাষানুগ কাটা পড়িল।<br />
<br />
বিমর্ষ আবদুল তবুও দমিল না। তাহার যে হস্তটি ঈশ্বরের মর্জিতে কাটা পড়িয়াছিল, উহার সহিত বাল্যকাল হইতেই তাহার ডিংডঙের প্রণয়সম্পর্ক ছিল, তাই একের অনুপস্থিতি যে অপর বেশিকাল সহিবে না, ইহাতে আশ্চর্য কী? সে বিনা ডিংডঙেই ভেড়া চরাইতে লাগিল।<br />
<br />
কিন্তু তাহার বিধি খালেকুজ্জামানকেও শরমিন্দা করিবার মত বাম, বাথানে জনৈক সিনাইবাসী দাস কাচ্চু খেলার ঝগড়ায় মারপিটে মারা পড়িল। নিয়োগকর্তা আসিয়া সোজা আবদুলকেই পাকড়াও করিলেন। আবদুল বিরক্ত মনে কাজীর দুয়ারে উপস্থিত হইল।<br />
<br />
কাজী ঈশ্বরের কানুন ঘাঁটিয়া রায় দিলেন, ইহার মস্তকটি কর্তন করা হৌক।<br />
<br />
নিয়োগকর্তা তখন কাশিয়া কহিল, হুজুর, ইহাতে আবার সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়িবে না তো?<br />
<br />
কাজী কিয়দক্ষণ ভাবিয়া কহিলেন, ইহার পোঁদটি কি অক্ষত আছে?<br />
<br />
নিয়োগকর্তা আবদুলের তহবন নামাইয়া তাহার পোঁদ পরীক্ষা করিয়া কহিল, আছে হুজুর।<br />
<br />
কাজী হাসিয়া কহিলেন, তাহলে সম্পর্কে কোনরূপ প্রভাব পড়িবে না।<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-60616692302260469612011-10-04T08:43:00.000+06:002011-10-20T08:44:14.100+06:00আদমচরিত ০৪৩<br />
অদূরে কোথায় যেন হট্টগোল হইতেছে, ঈশ্বর কর্ণপটহে কনিষ্ঠা অঙ্গুলি প্রবিষ্ট করিয়া আনমনে চুলকাইতে চুলকাইতে শুনিতেছিলেন। নন্দন কানন ক্রমশ হট্টগোলের জায়গায় পরিণত হইতেছে। স্বর্গদূতগুলি নিয়মিত হল্লা পাকায়। ইহার পিছনে আদমের কোনো ভূমিকা নাই তো?<br />
<br />
তিনি গলা খাঁকরাইয়া ডাকিলেন, "গিবরিল!"<br />
<br />
গিবরিল কিয়দক্ষণ পর তাহার রশ্মিনির্মিত ডানা ঝাপটাইতে ঝাপটাইতে বারান্দায় আসিয়া দাঁড়াইল।<br />
<br />
"কাহারা এইরূপ কোষ্ঠাকাঠিন্যে আক্রান্ত হায়েনার ন্যায় চেঁচাইতেছে?" ঈশ্বর শুধাইলেন।<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "জাঁহাপন, আসামী সাইদিল। সে ব্যাপক কান্দিতেছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "কেন?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "আসামী সাইদিল কারাগারের অভ্যন্তরে একটি কক্ষে স্পা করিতে ঢুকিয়াছিলো খোদাবন্দ। ঐ কক্ষে আদম একটি গোপন ক্যামেরা স্থাপন করিয়া সাইদিলের আগাপাস্তলা ভিডিও করিয়া লইয়াছে। সাইদিল আদমের বিরুদ্ধে ঈভ টিজিঙের অভিযোগ আনিতেছে। কিন্তু আদম যুক্তি দিতেছে, ইহা কোনরূপেই ঈভ টিজিং হইতে পারে না, বড়জোর সাইদিল টিজিং হইতে পারে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "তাহলে এত চেঁচামেচি কেন?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "সাইদিল গজব আহ্বান করিতেছে সদাপ্রভু।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "বটে? গজব কি বলীবর্দের মার্গপথে বাহির হয় নাকি যে সে বলিলেই গজব আসিয়া পড়িবে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "সাইদিল কারাগারে তাহার কক্ষে ঝুলন্ত হিজরি ক্যালেণ্ডার নামাইয়া মায়ান ক্যালেণ্ডার টাঙাইয়াছে, ইয়োর গ্রেস। সে আপনাকে ২০১২ সাল পর্যন্ত সময় দিয়াছে। ইহার মধ্যে গজব না নামাইলে সে আমরণ অনশন করিবে বলিতেছে। নন্দনকাননের প্রেসক্লাবের সামনে তাহার চামচাবৃন্দ ছাগলবন্ধনের ডাক দিতেছে। সাইদিল বলিতেছে, আপনার আরশ নাকি কাঁপিয়া উঠিবে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কিছুক্ষণ চিন্তা করিয়া বলিলেন, "গজব ডিপার্টমেন্টের হেড স্বর্গদূতকে গিয়া বল, সে যেন গজবগুলিকে উত্তমরূপে দড়ি দিয়া পুনরায় বাঁধিয়া রাখে। আর থরের বাড়িতে গিয়া তাহাকে বল, আমি হাতুড়িখানা এই বেলা ব্যবহার করিতে ধার চাহিতেছি, আর এক মুষ্ঠি পেরেক যেন সাথে দেয়। আর সে যেন আমার ভ্যাকুয়াম ক্লিনার আর এক বাটি চিনি যথাসময়ে ফিরত দিয়া যায়।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "হাতুড়ি দিয়া কী করিবেন প্রভু?"<br />
<br />
ঈশ্বর উঠিয়া আরশখানা উল্টাইয়া লইয়া কহিলেন, "কিছু তক্তা মারিয়া ভূমিকম্প প্রতিরোধের ব্যবস্থা করিব।"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "আরশ আর কাঁপিবে না?<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "না। সাইদিলের পশ্চাদ্দেশে ডাইনোসরের ডিম্ব প্রবিষ্ট করিলেও না।"<br />
<div>
<br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-25993939170820428662011-09-08T08:44:00.000+06:002011-10-20T08:45:08.356+06:00আদমচরিত ০৩২<br />
ঈশ্বর তাকিয়ায় হেলান দিয়া পান চিবাইতেছিলেন কচরমচর করিয়া। মাদার সুপিরিয়র রুষ্ট কণ্ঠে কহিলেন, "আর তো পারি না। স্বর্গযাজিকাদের লইয়া বিষম বিপদে পড়িয়াছি।"<br />
<br />
ঈশ্বর পিকদানিতে পানের পিক ফেলিয়া বিগলিত রসসিক্ত কণ্ঠে কহিলেন, "কেনু? তাহারা কি দুষ্টামি করিয়া বেড়ায়? লিখাপড়া করে না?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "হে জাঁহাপন, আপনি তো ভালো করিয়াই জানেন,. স্বর্গের কনভেন্টটি দিনে দিনে গোল্লা অভিমুখে ধাবমান। যত বেয়াড়া তরুণী স্বর্গবালা আসিয়া সেইখানে ভর্তি হয়। তাহাদিগকে নিয়ন্ত্রণ করা দিনে দিনে অসাধ্য হইয়া পড়িতেছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর চক্ষু নিমীলিত করিয়া পানচর্বণে মগ্ন হইয়া রহিলেন।<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "কনভেন্টের আশেপাশে যত বখাটে স্বর্গদূতেরা ছোঁক ছোঁক করিয়া বেড়ায়। তাহারা শিস বাজায়, ভূর্জপত্রে নিজেদের ফোন নম্বর লিখিয়া গোল্টু পাকাইয়া স্বর্গযাজিকাদের শয়নকক্ষ বরাবর নিক্ষেপ করে, পাশের গলিতে খালি গায়ে দাঁড়াইয়া তাহাদের রশ্মিনির্মিত পেশী প্রদর্শনের অশালীন প্রচেষ্টা করে। আর আদম ...।"<br />
<br />
ঈশ্বর চক্ষু খুলিয়া সগর্জনে কহিলেন, "আদম?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "হাঁ, আপনার সেই মৃত্তিকানির্মিত লম্পটটি। উহার কথা আর কী কহিব? ঘরে স্ত্রী রাখিয়া সে নিত্য নিত্য আসিয়া কনভেন্টের চারিপাশে চক্কর মারে। তাহার লঘুগুরু জ্ঞান বলিতে কিছু নাই। ধর্মশিক্ষিকা মোসাম্মৎ মাহিজাবিনিলকে সে ইলোপ করিবার কুপ্রস্তাব পাঠাইয়াছে। সে এমনই এক চিঠি যে পাঠ করিবার পর কুলি করিতে হয়। মাহিজাবিনিল সেই চিঠি পাঠ করিয়া সেই যে নিজের ঘরে দুয়ার দিয়াছে, আর বাহির হইতেছে না। গত দুইদিন সে স্বর্গশশা ভিন্ন অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্য স্পর্শ করিতেছে না ...।"<br />
<br />
ঈশ্বর ভুরু কুঁচকাইয়া কহিলেন, "স্বর্গশশা?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "আদম কচি কচি যাজিকাদিগকেও পটাইয়া ভাগাইবার প্রচেষ্টায় উন্মত্ত। সে কনভেন্টের পিছনের গলিতে নিজেই একটি মঞ্চ পাকাইয়া বক্তৃতা দিতেছে, বক্তৃতার শিরোনাম যৌবন একখানা গল্লিপ ধূম্রশলাকা।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "ইহার মানে কী?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "আমি জানি না, কিন্তু এই লেকচার শ্রবণ করিতে যাজিকাদের মধ্যে হুড়াহুড়ি কীলাকীলি শুরু হইয়াছে। কে কাহার আগে আদমের ওয়াজ শ্রবণ করিবে, ইহা লইয়া তাহারা বিষম চুলাচুলি পর্যন্ত করিয়াছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আদম হতভাগাটা বহুদিন ধরিয়া পক্কপোঁদের ন্যায় আচরণ করিতেছে। দিব নাকি একটি পদাঘাতে স্বর্গ হইতে দূর করিয়া?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র কহিলেন, "কয়জনকে স্বর্গ হইতে খেদাইবেন? ইহা অপেক্ষা শ্রেয় হইবে যদি একটি জবরদস্ত ডিরেক্টর অব গাইডেন্স কনভেন্টে নিয়োগ করা যায়। যাজিকাদের প্রয়োজন ডিসিপ্লিন শিক্ষা। একজন কড়া মাষ্টার আসিয়া তাহাদিগকে টাইট না দিলে অবস্থার বিশেষ উন্নতি হইবে না।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "তথাস্তু। কাহাকে এই পদে নিয়োগ দেয়া যায়?"<br />
<br />
মাদার সুপিরিয়র একটি নাম লেখা প্যাপিরাস আগাইয়া ধরিলেন।<br />
<br />
সায়াহ্নে স্বর্গবার্তার অনলাইন এডিশনে প্রকাশিত হইল এক সংবাদ। স্বর্গ কনভেন্টের ডিসিপ্লিন ফিরাইয়া আনিতে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাইয়াছেন স্বর্গদূত রনজেরেমিল।<br />
<div>
<br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-5085558170664865552011-09-04T08:54:00.000+06:002011-10-20T08:55:08.250+06:00পদরজ মাগিতেছি নমিয়া<br />
রবিবার প্রত্যূষখানি আজ কিছুটা বৃষ্টিস্নাত ছিল, কিন্তু দৈনিক প্রথম আলোতে ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের সাক্ষাৎকারখানি পড়িয়া মনের মেঘ কাটিয়া গেল। সাক্ষাৎকর্তা তারেক মাহমুদের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ নমস্কার।<br />
<br />
এতদিন ধরিয়া আদমচরিত আর ভোদাইচরিতমানস নামক দুইখানি আবোলতাবোল সিরিজে রম্যস্যাটায়ার মারিবার ব্যর্থ চেষ্টা করিয়া আসিতেছিলাম। লোক হাসাইবার উদ্দেশ্যেই। লোকে যে হাসিত না, এমনটি নহে। কেহ কেহ হাসিত, কেহ কেহ ব্যাজার হইত, মোটের উপর স্যাটায়ারের কার্য যাহা, তা চরিতার্থ হইত। কিন্তু আজ এই সাক্ষাৎকার পাঠ করিয়া আমি আমার কলম নামাইয়া রাখিতে চাহি দৈনিক প্রথম আলোর ক্রীড়াপৃষ্ঠার বিভাগীয় সম্পাদক, সাংবাদিক তারেক মাহমুদ ও ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের যৌথ ষড়ভূজের (পদের সংখ্যা কম কিংবা বেশি হইয়া থাকিলে জানাইবেন, তৎক্ষণাৎ ঠিক করিয়া লইব, আপনাদিগকে অপদস্থ করিবার সাহস অধমের নাই) গোড়ায়। তাহাদের চরণকমল হইতে পদরজ ক্ষুর দিয়া চাঁছিয়া (লক্ষ্য করিবেন, ক্ষুররজ পদ দিয়া চাঁছিয়া লিখি নাই কিন্তু) একটি চীনামাটির পাত্রে সংরক্ষণ করিয়া কুলুঙ্গিতে তুলিয়া রাখিব। আবারও কখনও যদি স্যাটায়ার লিখিতে বসি, সেই পদরজপাত্র মস্তকে ঠেকাইয়া লইব ঘনঘন।<br />
<br />
সাক্ষাৎকারের শিরোনাম দেখিয়াই চমকিয়া চেয়ার হইতে আছড়াইয়া পড়িয়াছিলাম মাটিতে। খেলোয়াড় কেন শাহরুখ খান হইতে চায়? প্রথমেই মনে হইল, শাহাদাত নিজে আর ক্রিকেট খেলিতে চাহিতেছে না, সে কলিকাতা নিশীথারোহীর ন্যায় বড়সড় ক্রিকেট দলের মালিক বনিতে উদগ্রীব। মনে মনে তাহার বিবেচনাবোধ ও উচ্চাভিলাষের প্রশংসা করিতে করিতে বাকিটুকু পড়িবার উদ্যোগ নিলাম। যখন জাতীয় দলে ঢুকিতে সবাই বিষম লালায়িত, তখন এই যুবক নিজের দল গড়িতে চাহিতেছে। এ যেন সেনাবাহিনীতে ভর্তিপরীক্ষায় ফেল মারিয়া নিজের সেনাবাহিনী গড়িবার মতো, এ যেন মেডিকেল কলেজে পড়িবার সুযোগ বঞ্চিত হইয়া নিজেই হাসপাতাল খুলিয়া বসা, এ যেন ইউনিয়ন পরিষদের ইলেকশনে হারিয়া নিজের ভিটাকেই নতুন ইউনিয়ন বলিয়া ঘোষণা করা। বাহ রে যুবক, এই তো চাই!<br />
<br />
কিন্তু বিঘতখান সাক্ষাৎকার পড়িয়াই মূক মারিয়া গেলাম। সাংবাদিক তারেক মাহমুদ সাক্ষাৎকার শুরুই করিয়াছেন ক্রিকেটার শাহাদাতের প্রেমজীবনে নাড়া দিয়া। পড়িয়া যা বুঝিলাম, শাহাদাত আগে প্রেম করিতেন, এখন প্রেম করিতেছেন না। বিবাহেও তাহার সহসা রুচি নাই। পাত্রী কেমন হওয়া উচিত, তাহা সম্পর্কেও তিনি পরিষ্কার ধারণা রাখেন না। তবে তারেক মাহমুদ খেই ধরাইয়া দেওয়ার পর তিনি জানাইলেন, তাহার যোগ্যা পাত্রীকে হইতে হইবে<br />
<br />
ক. লম্বা এবং<br />
খ. ফরসা এবং<br />
গ. দেখিতে সুন্দর<br />
<br />
তিনি নিজে ছয় ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা, কিন্তু এই উচ্চতার সীমা লইয়া নিঃসন্দেহ নন। রূপকথার সীম গাছের মতো তিনি আজও বাড়িতেছেন বলিয়া সন্দেহ পোষণ করেন। এই ক্রমবর্ধমান ক্রিকেটারটি আরো ফুটখানেক বাড়িবার পূর্বেই যে তাহাকে পাত্রীস্থ করা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব, তাহা বুঝিবার জন্য রকেটবিজ্ঞানী হইতে হয় না। শাহাদাত আরো জানাইয়াছেন, পাত্রীকে তাহার সমান লম্বা না হইলেও চলিবে, দেশের খর্বাকৃতি নারীকূলের কথা বিবেচনা করিয়া তিনি বাসার দেয়ালে পাঁচ ফুট ছয় অথবা সাত ইঞ্চি বরাবর একটি দাগ কাটিয়াছেন। কোনো ফরসা চামড়ার দেখিতে সুন্দর তরুণীর মস্তক সেই দাগ স্পর্শ করিলেই তিনি কবুল উচ্চারণ করিয়া ফেলিবেন। আর হাঁ, বিদেশে তিনি কদাপি সন্বন্ধ স্থাপন করিবেন না।<br />
<br />
সাংবাদিক তারেক মাহমুদ প্রেমিকার তথ্য যথেষ্ট পরিমাণ বাগাইতে না পারিয়া নারীভক্তকূলের দিকে অগ্রসর হইলেন। তাহার প্রশ্নের উত্তরে শাহাদাত জানাইলেন, নারীভক্তকূলের সাম্প্রতিক তথ্য তাহার কাছে হালনাগাদ করা নাই, তবে একদা তাহার প্রচুর নারীভক্ত ছিল। যখন তিনি সুদূর অতীতে জাতীয় দলে ছিলেন, তখন নারীভক্তের অভাব ছিল না। তবে সৃষ্টিকর্তার দাক্ষিণ্যে আজও তাহার নারীভক্তের সংখ্যা কম নহে, তাহারা তাকে ফোন করে, টোনও করে। সাংবাদিক তারেক মাহমুদ ব্যাকুল হইয়া জিজ্ঞাসিলেন, শুধু কি ফোন করে, নাকি দেখাসাক্ষাৎও হয়? জবাবে শাহাদাত রহস্য করিয়া কহিলেন, ফোন করে, আর দেখাসাক্ষাতের বিষয়টি বিগব্যাংপূর্ব স্থান ও কালের প্রকৃতির মতোই রহস্যপূর্ণ, ঐ বিষয়ে বলা বারণ। মরিয়া হইয়া সাংবাদিক তারেক মাহমুদ এইবার প্রেমের সংখ্যায় চলিয়া গেলেন। উত্তরে স্মিত হাসিয়া শাহাদাত প্রাণপণে স্মরণের চেষ্টা করিতে লাগিলেন, একের পর সংখ্যাটিকে কী বলিয়া ডাকা হয়। কিয়ৎক্ষণ ভাবিয়া যখন তাহা স্মরণাঙ্গণে আসিয়া দাঁড়াইল, তখন কহিলেন, "উমম...দুইটা দুইটা, হ্যাঁ দুইটা।" সেইসঙ্গে জাতি হাঁপ ছাড়িয়া বাঁচিল, যাক যুবক দুই পর্যন্ত গুণিতে জানে।<br />
<br />
এরপর সাংবাদিক তারেক মাহমুদ জিজ্ঞাসিলেন, নারীরা কেন শাহাদাতকে এত পছন্দ করে? শাহাদাতও তাহার ঝুলি খুলিয়া বসিলেন।<br />
<br />
আমরা জানিলাম, সর্বাপেক্ষা বড় কথা স্মার্টনেস। ইহা অনেকের মধ্যে না থাকিলেও শাহাদাতের মধ্যে সর্বাংশে আছে। শাহাদাত স্মার্টনেসের সংজ্ঞাও নির্ধারণ করিলেন অতঃপর, পরিচ্ছদ ও চালচলন। উচ্চতা স্মার্টনেসের একটি বড় উপাদান। শাহাদাত মনে করেন, উচ্চতা ও স্মার্টনেস পরস্পর সমানুপাতিক। তবে যারা শাহাদাতের সমান উচ্চতাবিশিষ্ট, তাহারাও শাহাদাত অপেক্ষা কম স্মার্ট, কারণ তাহারা অনেকেই "গুজা" হইয়া হাঁটেন। ন্যূব্জতার ফ্যাক্টরটি স্মার্টনেসের গণেশ উল্টাইয়া দিতে পারে, যাহা হইতে শাহাদাত মুক্ত। এমনকি তিনি স্মার্ট হইবার জন্য কোনো চেষ্টামাত্র করেন না। প্রকৃতির আপন চক্রে যেমন সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হইয়া পশ্চিম দিকে অস্ত যায়, চন্দ্রের আকর্ষণে যেমন জোয়ার আর ভাটা পর্যায়ক্রমিক আসে যায়, তেমনি শাহাদাতও স্মার্ট। তিনি ভালো পোশাক পরেন, ভালো হাঁটেন, ভালো করিয়া মানুষের সহিত বাক্যালাপ করেন। তবে তিনি এই প্রাকৃতিক চক্রের বাইরেও নিজের ঈশ্বরদত্ত স্মার্টনেস ধরিয়া রাখিতে যথাক্রমে ব্রেট লি ও শোয়েব আখতারের দিকে নজর রাখেন। তাহার মতে, তাহার নজর বরাবর ঊর্ধ্বপানে ছিল, এখনও আছে। ব্রেট লি আর শোয়েব আখতারের হন্টন ও কথনভঙ্গিমা তিনি নিজের মধ্যে পুষ্পরূপে ফুটাইয়া তুলিতে সচেষ্ট। হয়তো ইহাতে তাহার ঈশ্বরদত্ত স্মার্টনেসের এমন কোনো বৃদ্ধি ঘটিবে না, কিন্তু ক্ষয় যাতে না ঘটে, সেই কূল রক্ষা পাইবে।<br />
<br />
সাংবাদিক তারেক মাহমুদ প্রেম ও স্মার্টনেসের পর জুতাস্যাণ্ডেলের দিকে অগ্রসর হইতে গিয়াই থামিয়া পড়িলেন। কারণ শাহাদাত পাদুকা হইতে অধিক গুরুত্ব আরোপ করিয়া থাকেন শকটের উপর। পাদুকা নিয়া মাথা ঘামাইয়া থাকে তাহারা, যাহারা অন্তত কিছুদূর হাঁটিয়া অতিক্রমের ধান্ধায় থাকেন। শাহাদাত হাঁটা অপেক্ষা শকটারোহণ পছন্দ করিয়া থাকেন। তাহার বর্তমান শকটটি "ল্যাক্সাস", ইহার পূর্বে আরো কয়েকটি ছিল। তিনি এ যাবত প্রেমিকা মাত্র দুইখানি হাছিল করিলেও শকট বদলাইয়াছেন চারিখানা। ইহা হইতেই অনুমান করা যায়, দেশে যত ল্যাক্সাস আছে, তত ফরসাচামড়া-দেখিতেসুন্দর-পাঁচফিটছয়ইঞ্চির-শাহাদাতানুরাগী নারী নাই। দেশের এই দুর্যোগময় পরিস্থিতি লইয়া বেশি না ঘাঁটাইয়া সাংবাদিক তারেক মাহমুদ অনুসন্ধানে ব্রতী হইলেন, শাহাদাত তার প্রেমিকাদিগকে শকটে চড়াইয়া ঘুরাইয়া থাকেন কি না। শাহাদাত বিষণ্ণ হইয়া জানাইলেন, আগে ঘুরাইতেন। এখন তিনি চন্দ্র সূর্য ও হীরকরাজারবৈজ্ঞানিকের মতোই একা ও একক, তাই নিজেই ঘুরিয়া থাকেন।<br />
<br />
এর পর সাংবাদিক তারেক মাহমুদ শাহাদাতের স্মার্টনেসের আধিক্যের সহিত সিনেমার নায়কের ভূমিকার একটি কোরিলেশন উদ্ভাবন করিলেন। শাহাদাত তখন পর্যবেক্ষন জানাইলেন যে এতক্ষণে সাংবাদিক তারেক মাহমুদ সত্য কথা বলিতেছেন (অর্থাৎ এর আগে সকলই গরল ভেল)। তিনি আজ এই দিনেই এই লইয়া চিন্তার মতো দুরূহ কাজে প্রবৃত্ত হইয়াছেন। জাতীয় দল হইতে খসিয়া পড়িবার পর শাহাদাত অসূর্যম্পশ্য কাল কাটাইতেছেন অন্দরমহলে, যেখানে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি ঢুকিবার স্পর্ধা করে না। ফলস্বরূপ তিনি ফরসা হইয়া গিয়াছেন। একে তিনি স্মার্ট, সোজা হইয়া হাঁটিতে পারেন, তাহার উপর ফরসা! কলাবাগান ক্লাবে তাহার এক অগ্রজপ্রতিম তাহাকে উপদেশ দিয়াছেন চলচ্চিত্রে অভিনয় করিয়া সাকিব খানের অন্নসংস্থান পণ্ড করিতে। আরেক অগ্রজ বলিয়াছেন, তিনি সিনেমায় নামিলে দেশের আবালবৃদ্ধবণিতা একবার হইলেও সেই সিনেমা দেখিতে ছুটিবে। তিনি আবারও ভাবনার মতো শক্ত কাজে কিয়ৎকাল কাটাইয়া সম্মতি দিয়াছেন। তবে নাটক, মডেলিঙে তিনি নামিবেন না। হনন করি তো গণ্ডার, লুণ্ঠন করি তো ভাণ্ডার। তিনি সরাসরি সিনেমাতেই নামিবেন। ইহাতে পরিচালকও লাভ করিতে পারিবে, তাহারও পরিচিতি বাড়িবে। সবাই ছুটিবে শাহাদাত কি সিনেমা করিল তাহা দেখিতে।<br />
<br />
ইহার পর পরিষ্কার হইল, তিনি শাহরুখ খানের ন্যায় রোমান্টিক নায়ক হইতে চান। সাক্ষাৎকারের শিরোনাম তখন স্পষ্ট হইল। আজ সালাত আদায় করিয়া খোদার দরবারে দুই হস্ত জুড়িয়া মুনাজাত মারিব, হে পরওয়ারদিগার, এই লম্বা (এখনও বর্ধনশীল), গৃহবন্দিত্বের কারণে ফরসা ও সোজা হইয়া হাঁটিতে সক্ষম যুবকটির প্রতি তুমি করণ জোহরের দৃষ্টি স্থাপন করিয়া দ্যাও। পিলিজ।<br />
<br />
নায়িকা হিসাবে শাহাদাত প্রীতি জিনতাকে পছন্দ করিয়াছেন। তবে দেশের নায়িকাদের তিনি পছন্দ করেন না। বিন্দুকে তাহার ভালো লাগে, কিন্তু বিন্দু নায়িকা নহে, মডেলমাত্র। দুয়েকজন পরিচালকের সাথেও তিনি যোগাযোগ করিয়াছেন। মাঝেমধ্যে এফডিসিতেও পদরজ দিয়া থাকেন। আর কদাপি ক্রিকেট ছাড়িবেন না। খেলিয়া খেলিয়া হয়রান হইয়া পড়িলে যখন তিন-চার মাস বিরতি পাইবেন, তখন তিনি সিনেমা করিবেন। আর নায়িকা হিসাবে তিনি বাংলাদেশের পৃথুলা নায়িকাদের তাহার উছিলায় ভাত খাইতে দিবেন না, মডেলদের মধ্য হইতে লম্বা ও সুন্দর কাউকে বাছিয়া লইবেন। আর কদাপি স্ক্যাণ্ডাল ছড়াইতে দিবেন না। স্ক্যাণ্ডাল যাতে না ছড়ায় সেই নিমিত্তে তিনি নিয়মিত সিনেমা না করিয়া হঠাৎ হঠাৎ করিবেন।<br />
<br />
সাংবাদিক তারেক মাহমুদ একটি মূল্যবান পর্যবেক্ষণ হাজির করিলেন অতঃপর। সিনেমার নায়কেরা মেকআপ লইয়া তারকা, আর ক্রিকেটাররা মেকআপ না লইয়াই তারকা। ইহাতে শাহাদাত বিলক্ষণ ঐকমত্য পোষণ করিলেন। তিনি জানাইলেন, সিনেমায় একটি কৃষ্ণবর্ণ লোককে পাউডার প্রয়োগ করিয়া ফরসা করিয়া ফেলা হয়, যেখানে তিনি ঘরে বসিয়া থাকিয়া সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিকে অপক্ককদলী দেখাইয়াই ফরসা বনিতে পারেন। সৃষ্টিকর্তা তাহাকে আপনা হইতেই ফরসা করিয়া গড়িয়াছেন। তিনি খেদের সহিত কহেন, "চামড়া সাদা হলে তো আর সব হয় না।"<br />
<br />
নায়ক হিসেবে শাহাদাত নিজের উচ্চতা ও মুখশ্রীর (যাহা আল্লাহর রহমতে ভালো) প্রতি গুরুত্ব দিয়াছেন।<br />
<br />
সাংবাদিক তারেক মাহমুদ এরপর শাহাদাতের শরীরের রোমে হাত দিয়াছেন। তিনি জিজ্ঞাসিলেন, কেন শাহাদাত ক্ষৌরকর্ম করেন না? কেন সদ্যোদ্গত শ্মশ্রু লইয়া ঘুরাফিরা করেন? উত্তরে শাহাদাত জানাইয়াছেন, দাড়ির ব্যাপারে তিনি শহীদ আফ্রিদিকেই ধ্রুবতারা জ্ঞান করেন। সদ্য গজানো দাড়িতে আফ্রিদিকে মানায়, তাহাকেও নাকি ঐরকম দাড়িতে আফ্রিদির ন্যায় মনে হইয়া থাকে। প্রবাসে গিয়া যখন তার দাড়ি গজায়, তখন কেহই বিশ্বাস করে না যে তিনি বাংলাদেশ হইতে আগত। সবাই ধরিয়া লয় তিনি পাকিস্তানী। নিজের রূপের এই পাকিস্তানিতা বজায় রাখিতেই তিনি ক্ষৌরকর্মে মাঝেমধ্যে বিরতি দেন। ইহা ছাড়া আর কোনো ইয়ে ইহাতে নাই। নারীরা অবশ্য তাহার দাড়ি লইয়া ভাবিত নহে। কারণ তিনি দাড়ি রাখিলেও তাহারা মুগ্ধ, দাড়ি কামাইলেও তাহারা মুগ্ধ। শুধু ক্ষৌরকর্ম যেদিন সাধিত হয়, সেদিন তাহাকে দেখিয়া কুক্কুট বলিয়া সন্দেহ জাগে। তাই তিনি আফ্রিদির সহিত সাদৃশ্যকে বিসর্জন দিয়া মুরগির সহিত সাদৃশ্যকে বরণ করিতে নারাজ, তাই ক্ষৌরকর্ম জলাঞ্জলি দিয়া দাড়ি রাখিয়া থাকেন।<br />
<br />
সাংবাদিক তারেক মাহমুদ সাক্ষাৎকারের মাদুর গুটাইতে গিয়া আবারও শাহাদাতের প্রেমজীবনে ফিরিয়া গেলেন। বান্ধবী নাই, এইরূপে আর কতদিন? শাহাদাত উত্তরে হাসিয়া কহিলেন, সাক্ষাৎকার ছাপা হইলেই নারীমহলে তোলপাড় পড়িবে যে শাহাদাত বর্তমানে নিঃসঙ্গ। সমস্যা তখনই ঘুচিবে।<br />
<br />
সাক্ষাৎকার পূর্ণাকারে পাঠ করিয়া মনে যা জাগিলো, তাহার বিশদ বর্ণনা অবান্তর, তবে অবশিষ্ট রহিল শুধু শ্রদ্ধা। বাতিল ক্রিকেটারদিগকে প্রেমিকা ও সিনেমার রোল জুটাইয়া দিতে যখন ক্রীড়াসাংবাদিকরা আগাইয়া আসেন, তখন মনে আশা জাগে, আমাদের আশার ফুল আশরাফুল ভাইয়াও একদিন এমন করিয়া ক্রিকেট ত্যাজিয়া নাটক সিনেমায় পদার্পণ করিয়া আমাদের ক্রীড়া ও বিনোদনজগত, উভয়কে উপকৃত করিবেন।<br />
<br />
জীবনে দুঃখ আছে, বেদনা আছে, আছে বিষাদ, অভিমান, গ্লানি, শোক, কষ্টকাতরতা। প্রকৃতি তাই ক্ষতিপূরণ হিসাবে সৃষ্টি করিয়াছে প্রথম আলোর ক্রীড়াপৃষ্ঠা, তাহার বিভাগীয় সম্পাদক, সাংবাদিক তারেক মাহমুদ ও ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনকে। বিপুলা এ জগত এক হাতে চটকানা মারিয়া যেমন কাঁদাইয়া থাকে, তেমনি অন্য হাতে কাতুকুতু দিয়া হাসাইয়া রাখে। মুখফোড়ের প্রণতি এই ইকুইলিব্রিয়ামের প্রতি। যাই, শেভ করিয়া রোদে রোদে একটু গুজা হইয়া হাঁটিয়া আসি।<br />
<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-22870595759941496862011-08-20T08:53:00.000+06:002011-10-20T08:53:55.784+06:00আদমচরিত ০৪১<br />
ঈশ্বর সপ্তাহে একদিন ছুটি কাটাইয়া থাকেন। বাকি ছয়দিন হুলুস্থুলু অফিস করেন। সারা ব্রহ্মাণ্ডের কার্যাদি সাধন করিয়া বেড়াইতে হয়। কোন ছায়াপথে কোন নক্ষত্রকে ঘিরিয়া কোন গ্রহ লাট খাইতে খাইতে নিজের উপগ্রহসমূহকে ঘুরাইয়া মারিবে, তাহা পদে পদে নির্ধারণ করিয়া দেন। কোন ব্যাং কোন দাদুরীর সহিত সঙ্গম করিয়া কোন পাতার নিচে ডিম্ব পাহারায় নিযুক্ত হইবে, তাহাও তাকেই বাছিয়া দিতে হয়। পান হইতে চুন খসিলেই সব আউলাইয়া যাইবে।<br />
<br />
কিন্তু ছয়দিন অফিস করিয়া ঈশ্বরের পোষায় না। তিনি দীর্ঘদিন যাবত হলিডে কাটান না। লোকে ছুটিতে কক্সবাজার যায়, ব্যাংকক যায়, ফুকেট যায়, বিচিত্র সব মাসাজ উপভোগ করিয়া চনমনা হইয়া বাটী ফেরে, আর তিনি বসিয়া বসিয়া জগতসংসারের সুতার গিটঠু পাকাইতেছেন আর ছাড়াইতেছেন। কোনো বিনোদন নাই।<br />
<br />
ঈশ্বর স্থির করিলেন, তিনিও হলিডে মারিবেন এক চক্কর। ব্যাংককে গিয়া উপর্যুপরি ফূর্তি মারিবেন। ফূর্তির চোটে বুড়া হাড্ডিতে চোট পাইলে বুমরুনগ্রাদে চিকিৎসা করাইয়া আসিবেন।<br />
<br />
ঈশ্বর আনমনে একটি গামছায় প্রয়োজনীয় টুকিটাকি ভরিতে ভরিতে মোবাইল মারিয়া গিবরিলকে তলব করিলেন। গিবরিল আসিয়া সেলাম ঠুকিল।<br />
<br />
একটি নিমের ডাল, আধা শিশি খাঁটি সর্ষপতৈল, কয়েকটি কানকাঠি, মেষচর্মের কনডম প্রভৃতি কাজের জিনিস গামছায় পুঁটুলি বাঁধিতে বাঁধিতে ঈশ্বর কহিলেন, "তা গিবরিল, ডাইনোসরগুলি কেমন আছে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তারা আনন্দে আছে জাঁহাপন। কেহ পানিতে সাঁতার কাটিতেছে, কেহ আকাশে উড়িতেছে, বাকিরা জমিনেই দাপাদাপি করিয়া অস্থির।"<br />
<br />
ঈশ্বর খুশি খুশি গলায় কহিলেন, "বিস্তর বিবর্তন ঘটিতেছে শুনিলাম?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "হাঁ। বিবর্তিত হইয়া তাহারা পৃথিবীর তাবত ফুটাফাটা দখল করিয়া বসিয়াছে।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "গুড! ভারি কাজের জিনিস এই বিবর্তন! যাই হউক, আমি একটু হলিডে মারিয়া আসি। তোমরা নন্দন কাননকে দেখিয়া শুনিয়া রাখো। গণ্ডগোল করিও না। আর আদম কোনরূপ বেচাল ঘটাইলেই তাহার কানশা বরাবর একটি প্রকাণ্ড থাবড়া মারিয়া বসাইয়া দিবে ... হতভাগা একখানা!"<br />
<br />
গিবরিল ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া কহিল, "আপনি হলিডেতে গেলে জগত সংসার চালাইবে কে?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "কেন, শাজাহানিল?"<br />
<br />
গিবরিল আঁতকাইয়া উঠিয়া কহিল, "শাজাহানিল কি জগতসংসার চালাইতে পারিবে? উহার কি লাইসেন্স আছে?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আহা, হিংসুক প্রবৃত্তি দূর কর গিবরিল। শাজাহানিল আমার মহল্লার স্বর্গদূত, উহাকে বিলক্ষণ চিনি।"<br />
<br />
গিবরিল ভ্যানভ্যান করিতে লাগিল, "শাজাহানিল তো আনপড় একখানা! ও চালাইবে জগতসংসার?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "শোনো, এত লেখাপড়া দিয়া কী হইবে? তাছাড়া শাজাহানিল সিগনাল চিনে, গবাদি ও ছাগাদি পশুও চিনে, আদম আর ঈভকেও চিনে অল্পবিস্তর। দুশ্চিন্তা করিও না। উহাকে লাইসেন্স দিয়া গেলাম।"<br />
<br />
ঈশ্বর কাঁধে পুঁটুলি ঝুলাইয়া ব্যাংকক অভিমুখে যাত্রা শুরু করিলেন।<br />
<br />
শাজাহানিল হাসিমুখে জগত সংসারের দায়িত্ব গ্রহণ করিল।<br />
<br />
সে পঁয়ষট্টি মিলিয়ন বৎসর আগের কথা।<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-69655866412656730952011-03-02T08:55:00.000+06:002011-10-20T08:56:22.419+06:00আদমচরিত ০৩৪<br />
গিবরিল আসিয়া কহিল, "আদম, তোমার জন্য দুঃসংবাদ আছে!"<br />
<br />
আদম আমড়ার আঁটি চুষিতে চুষিতে কহিল, "বলিয়া ফেল। নন্দন কাননের জীবন, সুসংবাদ আশা করা ছাড়িয়া দিয়াছি। মৃত্তিকা হইতে সৃষ্ট হইয়াছি বলিয়া বগল ঘামিয়া গন্ধ হয়, পঞ্জরের বিনিময়ে একখানা হতভাগিনী স্ত্রী পাইয়াছি যে এক শয্যায় শয়ন করিতে চায় না, জ্ঞানবৃক্ষের ফলটাও শ্যালকের দল এক কামড় খাইতে দিতে রাজি না, আর বন্ধুস্যাঙাৎ বলিতে আছ এই তুমি, রশ্মিনির্মিত নির্বোধ স্বর্গদূত গিবরিল। এই জীবনে অধিক কী দুঃসংবাদ থাকিতে পারে? ঈশ্বর আমাকে কি এইবার ঊর্বাস্থির বিনিময়ে একজন শাশুড়ি নির্মাণ করিয়া দিবেন? নাকি জ্ঞানবৃক্ষের ফলের পাশাপাশি এই সাধের আমড়াখানিও ফৌজদারি তালিকায় নাম লিখাইল?"<br />
<br />
গিবরিল গলা খাঁকরাইয়া পরোয়ানা বাহির করিয়া পড়িল, "বয়সের কারণে তোমাকে আদম পদ হইতে অপসারণ করা হইল!"<br />
<br />
আদম সটান উঠিয়া বসিয়া কহিল, "আদম পদ হইতে অপসারণ করা হইল মানে? আদমকে আদম পদ হইতে অপসারণ করে কীরূপে? অ্যাঁ? মশকরা মারিতেছ নাকি?"<br />
<br />
গিবরিল চশমা পরিষ্কার করিয়া পুনর্বার পরোয়ানা পাঠ করিয়া কহিল, "না। পরিষ্কার লেখা আছে। আদম নির্মাণ অধ্যাদেশের ধারা ৪২১ উপধারা গ-তে পরিষ্কার লেখা আছে সবকিছু। তোমাকে বৎসর দশেক পূর্বেই আদম পদ হইতে সরাইয়া দেওয়ার কথা। কিন্তু তুমি জবরদস্তি এই পদে দশ বৎসর অধিক গুজরান করিয়াছে। এখন মানে মানে কাটিয়া পড়।"<br />
<br />
আদম চক্ষু রাঙাইয়া কহিল, "কাটিয়া পড়িব মানে? কাটিয়া কোথায় পড়িব? এইখানে আমার ঘর-সংসার, জমি-জিরাত, আড্ডা-আস্তানা সকল ছাড়িয়া কোথায় কাটিব আমি?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ঈশ্বর তোমাকে পৃথিবীতে পাঠাইয়া দিবেন মনে হয়।"<br />
<br />
আদম দন্তে দন্তে ঘর্ষণ করিয়া কহিল, "ঈশ্বর হতভাগা বহুদিন যাবৎ আমার পিছে অঙ্গুলিসঞ্চালনের মতলবে আছে! জ্ঞানবৃক্ষের ফলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করিয়া বেটার মন ভরে নাই, এইবার বয়সের দোষ ধরিয়া আমাকে নন্দন কানন হইতে খেদাইবার অপচেষ্টা! আমি কাটিয়া পড়িলে স্বর্গ আর স্বর্গ থাকিবে? ধ্বসিয়া পড়িয়া গুড়া গুড়া হইবে না?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "মনে হয় না।"<br />
<br />
আদম মাটিতে পা ঠুকিয়া কহিল, "আমি কাটিয়া পড়িব না। পশ্চাদ্দেশে ভাতের আঠা মাখিয়া এই স্বর্গেই পড়িয়া থাকিব। দেখি কোন শালা আমাকে হঠায়!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তুমি কি মামলা মকদ্দমা করিবে?"<br />
<br />
আদম ক্রুর হাসিয়া কহিল, "না!"<br />
<br />
গিবরিল ভয়ে ভয়ে কহিল, "হিলারিক্লিনটনিলকে ফোন করিয়া নালিশ ঠুকিবে?"<br />
<br />
আদম ক্রুরতর হাসিয়া কহিল, "তা-ও না!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তবে কী করিবে? সশস্ত্র বিপ্লব?"<br />
<br />
আদম হুহুঙ্কারে হাসিয়া কহিল, "কাল সক্কালেই উঠিয়া সাপ্তাহিক চান্দের আলোর ইস্পোর্টস রিপোর্টার উটপোঁদশুভ্রিলকে সুপারি খিলাইব! বহিষ্কৃত বাতিল মালকে কীরূপে পুনরায় তাহার আগের জায়গায় বসাইতে হয়, সেই কায়দা তাহার ন্যায় উত্তমরূপে আর কেহই জানে না!"<br />
<div>
<br /></div>Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-61560225398604662892011-02-20T08:59:00.000+06:002011-10-20T08:59:17.511+06:00আদমচরিত ০৩৩<br />
নন্দন কানন ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি স্বর্গদূত লোটাসিল তাহার রশ্মিনির্মিত গলাটি খাঁকরাইয়া কহিল, "প্রিয় ক্রিকেটারবৃন্দ! আজ তোমাদের সামনে বক্তৃতা করিবেন স্বর্গের প্রথম আরারাতবিজয়ী, মৃত্তিকাপুত্র আদম! তিনি তোমাদের শিক্ষা দিবেন, কীরূপে ক্রিকেট ম্যাচে জয়লাভ করিতে হয়!"<br />
<br />
আদম পর্বতপ্রমাণ বিকট হাসি মুখে ঝুলাইয়া মঞ্চে আরোহণ করিল। তাহার মুখে অক্সিজেনমুখোশ, চোখে তুষারচশমা, পায়ে কণ্টকিত পাদুকা। মাইক হাতে লইয়া সে কহিল, "প্রিয় ক্রিকেটাররা আমার! আজ আমি তোমাদের জানাইব, কী করিয়া চ্যাম্পিয়ন হইতে হয়!"<br />
<br />
উপস্থিত সকলেই একে অপরের বদনপানে চাহিল।<br />
<br />
আদম পকেট হইতে একটি চোথা বাহির করিয়া কহিল, "তোমরা তো নিয়মিত সাপ্তাহিক চান্দের আলো পাঠ কর। সেখানে বিশিষ্ট সাংবাদিক, গল্পকার, কবি, কলামিস্ট, চলচ্চিত্রনাট্যকার, ক্রিকেটবোদ্ধা, ঔপন্যাসিক, উত্তর পার্বত্য পর্বতারোহণ সংঘের সভাপতি ও চান্দের আলোর উপসম্পাদক স্বর্গদূত আনিসাইলের লেখা পাঠ করিয়া তোমরা তো জানই, কী মর্মান্তিক প্রচেষ্টায় আমি আরারাতশৃঙ্গ জয় করিয়াছি! তোমাদেরও একইরূপে সম্মুখে আগাইতে হইবে।"<br />
<br />
সকলে আবার একে অপরের বদনদর্শন করিল।<br />
<br />
আদম গলা খাঁকরাইয়া চোথা কনসল্ট করিয়া কহিল, "প্রথমে তোমাদিগকে একটি ক্রিকেট সংঘ খুলিতে হইবে। বিশিষ্ট সাংবাদিক, গল্পকার, কবি, কলামিস্ট, চলচ্চিত্রনাট্যকার, ক্রিকেটবোদ্ধা, ঔপন্যাসিক, উত্তর পার্বত্য পর্বতারোহণ সংঘের সভাপতি ও চান্দের আলোর উপসম্পাদক স্বর্গদূত আনিসাইলকে উহার সভাপতি পদে বসাইতে হইবে। যদিও সে ক্রিকেটের কিছুই বুঝে না। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হইতে গেলে তাহাকে সঙ্গে লইতেই হইবে।"<br />
<br />
ক্রিকেটাররা উসখুস করিয়া উঠিল।<br />
<br />
আদম দমিল না। সে কহিল, "দ্বিতীয়ত, বিশিষ্ট ক্রীড়াসাংবাদিক ও ক্রিকেটজ্ঞ স্বর্গদূত উটপোঁদশুভ্রিলকে তোমাদের দলের কনসালট্যান্ট নিয়োগ করিতে হইবে। সেও বিশিষ্ট সাংবাদিক, গল্পকার, কবি, কলামিস্ট, চলচ্চিত্রনাট্যকার, ক্রিকেটবোদ্ধা, ঔপন্যাসিক, উত্তর পার্বত্য পর্বতারোহণ সংঘের সভাপতি ও চান্দের আলোর উপসম্পাদক স্বর্গদূত আনিসাইলের ন্যায় ক্রিকেট বুঝিতে অপারগ, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হইতে গেলে তাহাকে সঙ্গে লইতেই হইবে।"<br />
<br />
ক্রিকেটাররা ব্যাপক উসখুস করিতে লাগিল।<br />
<br />
আদম চোথার পানে চাহিয়া দৃপ্ত কণ্ঠে কহিল, "তোমাদের দলে ঠিক জায়গায় ঠিক ব্যক্তিটি নাই। যেভাবেই হউক না কেন স্বর্গদূত আশরাফিলকে দলে রাখিতে হইবে।"<br />
<br />
কে বাদ পড়িবে, ইহা লইয়া মৃদু গুঞ্জন উঠিল ক্রিকেটারদের মাঝে।<br />
<br />
আদম কহিল, "চ্যাম্পিয়ন হইতে গেলে পার্বত্যাঞ্চল হইতে সোমবাহাদুরতামাঙিলকে দলের ভাইস ক্যাপ্টেন নিয়োগ দিতে হইবে। যদিও সে ক্রিকেটের কিছুই জানে না, কিন্তু তাহার উপস্থিতি অতীব জরুরি।"<br />
<br />
ক্রিকেটাররা হতবাক হইয়া পড়িল।<br />
<br />
আদম কহিল, "বিশ্বকাপের ন্যায় বড় টুর্নামেন্টে জয়ী হইতে গেলে তোমাদের কিছু ছোটো টুর্নামেন্টে জয়লাভ করিতে হইবে। সেইগুলির আয়োজন করিতে হইবে লোকচক্ষুর আড়ালে, বহু দূরের কোনো স্টেডিয়ামে, যেইখানে কাকপক্ষীও নাই। সেইখানে গিয়া ভিডিও ক্যামেরাগুলি হইতে ব্যাটারি খুলিয়া লইতে হইবে। কোনো ছবি, ভিডিও যেন না থাকে! খেলায় জয়লাভ কর আর না কর, আসিয়া বলিতে হইবে তোমরাই জয়লাভ করিয়াছ! ভয় করিও না, সোমবাহাদুরতামাঙিল তোমাদের হইয়া সাক্ষ্য দিবে। কোনো নালায়েক প্রমাণ চাহিলে বিশিষ্ট সাংবাদিক, গল্পকার, কবি, কলামিস্ট, চলচ্চিত্রনাট্যকার, ক্রিকেটবোদ্ধা, ঔপন্যাসিক, উত্তর পার্বত্য পর্বতারোহণ সংঘের সভাপতি ও চান্দের আলোর উপসম্পাদক স্বর্গদূত আনিসাইল তাহাকে সামাল দিবেন।"<br />
<br />
ক্রিকেটাররা হতবিহ্বল কণ্ঠে প্রতিবাদ করিয়া উঠিল।<br />
<br />
আদম পাত্তা না দিয়া কহিল, "ইহাই আরারাতজয়ের কৌশল। অতএব তোমরা আগাইয়া চল, বাকিটা উটপোঁদশুভ্রিল ও বিশিষ্ট সাংবাদিক, গল্পকার, কবি, কলামিস্ট, চলচ্চিত্রনাট্যকার, ক্রিকেটবোদ্ধা, ঔপন্যাসিক, উত্তর পার্বত্য পর্বতারোহণ সংঘের সভাপতি ও চান্দের আলোর উপসম্পাদক স্বর্গদূত আনিসাইল ম্যানেজ করিবেন।"<br />
<br />
ক্রিকেটাররা ক্ষুব্ধ কণ্ঠে নানা নারা তুলিল।<br />
<br />
আদম হাসিমুখে কহিল, "আজ তোমরা শিখিলে কীরূপে চ্যাম্পিয়ন হইতে হয়। এখন আমাকে প্রণাম কর।"<br />
<br />
ক্রিকেটার স্বর্গদূতেরা গোমড়ামুখে সকলে আদমকে প্রণাম করিল, কিন্তু একজন ক্রিকেটার মুখ গোঁজ করিয়া দাঁড়াইয়া রহিল, প্রণাম করিল না।<br />
<br />
আদম গিবরিলের কানে কানে কহিল, "এই বেয়াদবটি কে?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "উহার নাম শয়তান!"<br />
<br />
আদম হাতে কীল মারিয়া কহিল, "হতচ্ছাড়া আমাকে প্রণাম করিল না দেখিতেছি! উহাকে শুধু দল হইতে নয়, স্বর্গ হইতেই খেদাইয়া দেওয়ার সুপারিশ করিব ঈশ্বরের কাছে!"<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-80666221709162569332011-01-30T08:59:00.000+06:002011-10-20T09:00:05.299+06:00আদমচরিত ০৩১<br />
গিবরিল তাহার রশ্মিনির্মিত নাসিকা ডাকাইয়া ঘুমাইতেছিল। দরজায় পদাঘাতের শব্দ শুনিয়া সে ধড়মড়িয়া ঘুম ভাঙিয়া উঠিয়া বসিয়া চক্ষু রগড়াইল।<br />
<br />
আদম অধৈর্য হইয়া কহিল, "আব্বে বারবণিতার সন্তান, দুয়ার খুলিবি নাকি অগ্নিসংযোগ করিব?"<br />
<br />
গিবরিল হতচকিত হইয়া লুঙ্গির গ্রন্থি ঠিক করিতে করিতে গিয়া দরজা খুলিল। আদম একটি বড়সড় ঠোঙা হস্তে তাহাকে ঠেলিয়া ঘরে প্রবেশ করিয়া দরজায় অর্গল তুলিয়া হাঁপাইতে লাগিল।<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "কী হইয়াছে আদম? চুরি করিয়া ফিরিলে নাকি?"<br />
<br />
আদম ওষ্ঠে তর্জনী ঠেকাইয়া কহিল, "শশশশশশশ! আস্তে!"<br />
<br />
গিবরিল তাহার রশ্মিনির্মিত নাসিকা কুঁচকাইয়া বাতাস শুঁকিয়া কহিল, "এ কী? নিষিদ্ধ ফলের গন্ধ কেন ঘরে?"<br />
<br />
আদম তাহার ঠোঙা খুলিয়া দেখাইল, অভ্যন্তরে কয়েকটি সুপক্ক নিষিদ্ধ ফল, ঘ্রাণে চতুর্পাশ আমোদিত।<br />
<br />
গিবরিল আতঙ্কিত হইয়া কহিল, "এ কী করিয়াছ হে মৃত্তিকাপুত্র?"<br />
<br />
আদম কহিল, "রশ্মিঠোলারা ডগ স্কোয়াড লইয়া তাড়া করিয়াছে! এখন কী করিব?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "সর্বনাশ! তোমার সহিত আমাকেও এখন গেরেফতার করিবে দেখিতেছি!"<br />
<br />
আদম কহিল, "কুইক, শয়তানকে এসেমেস পাঠাও! এখন শয়তানের পরামর্শ ছাড়া গতি নাই!"<br />
<br />
গিবরিল মোবাইল খুলিয়া শয়তানকে এসেমেস করিল, আদম ইল কাম শার্প।<br />
<br />
মিনিট পাঁচেক পরেই শয়তান সর্পিল গতিতে গিবরিলের জানালা দিয়া ঘরে প্রবেশ করিল। আদম তাহাকে দেখিয়া ফুঁপাইয়া উঠিয়া কহিল, "দোস্ত, একটা উপায় বল!"<br />
<br />
শয়তান পরিস্থিতি বিস্তারিত জানিয়া আরাম কেদারায় বসিয়া হুঁকায় তামাক টানিতে টানিতে কহিল, "ঈশ্বর তোমাকে ঠিকই কানে ধরিয়া দরবারে হাজির করাইবে। লোকটি বড় বদ। সর্বদাই পাপের শাস্তি প্রদানে মুখাইয়া থাকে। হতভাগা আমার পশ্চাতে দীর্ঘদিন ধরিয়া লাগিয়া আছে, তাহাকে আমি অস্থিরন্ধ্রে চিনি। তোমাকে এখন ঘাগু দেখিয়া কয়েকটি উত্তরাধুনিককে ভাড়া খাটাইতে হইবে। যাহারা ফুকো, লাকাঁ, হেগেল, ফরহাদ মজহার, রন জেরেমি প্রভৃতি নাম আওড়াইতে পারে।"<br />
<br />
আদম খসখস করিয়া প্যাপিরাসে টুকিতে লাগিল সব।<br />
<br />
শয়তান কহিল, "ঈশ্বরকে প্রথমে "ডিসকোর্স" শব্দটি বারবার শুনাইতে হইবে। আমি লক্ষ্য করিয়া দেখিয়াছি, ব্যাটা ডিসকোর্স শব্দটি শুনিলেই উসখুস করে, ডানে বামে তাকায়। প্রতীয়মান হয়, শব্দটির অর্থ সে ভালোমতো জানে না। কাজেই তোমাকে বলিতে হইবে, নিষিদ্ধ ফল চুরির ডিসকোর্সটি লইয়া মিশেল ফুকো কী বলিয়াছেন, তাহা ঈশ্বর জানে কি না।"<br />
<br />
আদম টুকিতে টুকিতে কহিল, "ফুকো কী বলিয়াছে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "খুঁজিয়া দেখিব মাপমতো কোনো কথা ফুকো বলিয়াছে কি না। না বলিলে নিজেরাই বসাইয়া লইব। ... যাহা বলিতেছিলাম, ডিসকোর্স শব্দটিতে যদি ঈশ্বর ঘায়েল না হন, তাহলে তোমাকে বলিতে হইবে কাউন্টার ন্যারেটিভের কথা। ঈশ্বরকে বুঝাইতে হইবে, নিষিদ্ধ ফল পাড়িয়া ভক্ষণের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার গ্র্যান্ড ন্যারেটিভ ব্যতীত আরো বহু বিকল্প কাউন্টার ন্যারেটিভ থাকিতে পারে ডানে-বামে। উহাদের অস্বীকার করা অশিক্ষিতের কাজ। কাজেই তোমার এই নিষিদ্ধ ফল পাড়িয়া ভক্ষণ অনেক কাউন্টার-ন্যারেটিভের একটি মাত্র।"<br />
<br />
আদম কহিল, "কীসব খটোমটো বলিতেছো, হিয়েরোগ্লিফিক্সে লিখিতে গিয়া হস্ত খসিয়া পড়ার উপক্রম!"<br />
<br />
শয়তান মিটিমিটি হাসিয়া কহিল, "হস্ত দিয়া আর কী করিবে, নিষিদ্ধ ফল তো এখন হাতের নাগালে। তোমার যাবতীয় হস্তশিল্পের দায়িত্ব ঈভের ওপর ন্যস্ত করিও।"<br />
<br />
আদম উৎফুল্ল হইয়া কহিল, "আবাজিগস! কিন্তু ডিসকোর্স আর কাউন্টার-ন্যারেটিভেই কি কাজ চলিবে? আর কোনো বদখদ শব্দ নাই?"<br />
<br />
শয়তান তামাকে টান দিয়া কহিল, "আছে বৈকি। ডিকনস্ট্রাকশন। তরল ভয়। আর্টিফিশিয়াল কনস্ট্রাক্ট। মানবতাপ্রেমী শান্তিবাদ। উত্তর-উপনিবেশী সুফিবাদ। বৈশ্বিক মানবতাবোধ। ওরিয়েন্টালিজম। ইতিহাসের ডিসকার্সিভ ভিন্নপাঠ। জাতীয়তাবাদী ইগো। ... আরো লাগিবে?"<br />
<br />
আদম উৎফুল্ল স্বরে টুকিতে টুকিতে কহিল, "আপাতত এগুলিই কাজে লাগাইতেছি। ঈশ্বর ভুদাইকে এইসব দিয়াই কাত করিব। হতভাগা তো মাদ্রাসায় গমনই করে নাই ঠিকমতো, গ্রহনক্ষত্র নির্মাণ লইয়া ব্যস্ত ছিল। আনপঢ় একখানা। এইসব শব্দ মারিয়া মারিয়া ব্যাটাকে ঘায়েল না করিয়াছি তো আমার নাম আদমই নহে!"<br />
<br />Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-49481510401915409642010-12-04T04:38:00.000+06:002010-12-04T04:38:14.611+06:00আদমচরিত ০৩০<a href="http://www.flickr.com/photos/warcrime71/4619642501/" title="adam01 by যà§à¦¦à§à¦§à¦¾à¦ªà¦°à¦¾, on Flickr"><img alt="adam01" height="500" src="http://farm5.static.flickr.com/4020/4619642501_311fd112c1.jpg" width="422" /></a><br />
<br />
<br />
আদম ল্যাপটপে বসিয়া খুটখাট টাইপ করিতেছিল, গিবরিল আসিয়া কহিল, "মৃত্তিকাপুত্র আদম, কী করিতেছ? ফেসবুকে যৌনালাপ?"<br />
<br />
আদম রুষিয়া কহিল, "ভোজনের পর কি আর কোনো কর্ম নাই আমার? ওয়েবসাইট আপডেট করিতেছি ওহে গিবরিল! এইবার সকল কুকর্ম ফাঁস করিয়া দিব!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "কাহার কুকর্ম? কীরূপে ফাঁস করিবে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "স্বর্গলিক্স ডট অর্গ নামে একটি ওয়েবসাইট খুলিয়াছি কি সাধে?"<br />
<br />
গিবরিল বিস্মিত হইয়া কহিল, "সেই ওয়েবসাইটে কী ফাঁস করিবে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "স্বর্গে বহু দুইলম্বরি কার্যক্রম দিবসের পর দিবস ধরিয়া চলমান ওহে গিবরিল! তুমি কি জান, ঈশ্বরের শয়নকক্ষে তাহার খাটিয়ার পাশের তোরঙ্গে কী পাওয়া গিয়াছে?"<br />
<br />
গিবরিল দক্ষিণে বামে তাকাইয়া ফিসফিস করিয়া কহিল, "কী?"<br />
<br />
আদম কহিল, "রিচার্ড ডকিন্সের দ্য গড ডিল্যুশান! ... ইহার ভিডিও প্রতিবেদন আমাকে পাঠাইয়াছে স্বর্গদূত বিটিভিল!"<br />
<br />
গিবরিল আঁতকাইয়া উঠিয়া কহিল, "তওবা তওবা! ঈশ্বর কি জানেন এইসব?"<br />
<br />
আদম কহিল, "জানেন বলিয়া মনে হয় না! তবে কিছুক্ষণ পর গোটা স্বর্গে এই খবর রাষ্ট্র করিয়া ছাড়িব! সঙ্গে আরো অনেক কিছু!"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "আর কী ফাঁস করিবে?"<br />
<br />
আদম কীবোর্ডে অঙ্গুলির তুফান চালাইয়া কহিল, "ঈভ যে শয়তানকে ডাকিয়া জ্ঞানবৃক্ষের বাগান আক্রমণ করিতে উসকাইতেছে, তাহা কি জান?"<br />
<br />
গিবরিল হতবাক হইয়া কহিল, "সে কী!"<br />
<br />
আদম কহিল, "ঈশ্বরের আর্থিক চুরিচামারির তথ্যও আমার হাতে আসিয়া পৌঁছাইয়াছে। আমার শরীরের অরিজিনাল নকশায় আমাকে দুইটি শিশ্ন নির্মাণ করিয়া দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ঈশ্বর হতভাগা মৃত্তিকার পরিমাণে নয়ছয় করিবার কারণে আমার ভাগ্যে একটি মাত্র জুটিয়াছে, তাহাও প্রথম নকশার ন্যায় হৃষ্টপুষ্ট নহে! মৃত্তিকার টেণ্ডারের টাকা লুটিয়া খাইয়া ঈশ্বর বাটপার আমার দাম্পত্য জীবনটি ছারখার করিয়া ছাড়িয়াছে! সকল দলিলাদি এখন স্ক্যান করিয়া তুলিয়া দিব ওয়েবসাইটে! হতভাগার খোদকারিতে যদি ল্যাং না মারিয়াছি তো আমার নাম ...!"<br />
<br />
এমন সময় গিবরিলের মোবাইলে রিং টোন বাজিয়া উঠিল, "মুন্নি বদনাম হুয়ি গিবরিল তেরে লিয়ে!" গিবরিল ফিসফিস করিয়া কহিল, "বস ফোন মারিয়াছেন!"<br />
<br />
আদম চুপ করিয়া টাইপ করিতে লাগিল।<br />
<br />
গিবরিল ফোন ধরিয়া হুঁ হাঁ জো হুকুম বলিয়া ফোন রাখিয়া কহিল, "তোমার জন্য দুঃসংবাদ আছে আদম!"<br />
<br />
আদম কহিল, "কী?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "তোমার স্বর্গলিক্সের খবর সম্ভবত ঈশ্বর জানিয়া গিয়াছেন। তোমার নামে সারা স্বর্গে রেড অ্যালার্ট জারি হইয়াছে!"<br />
<br />
আদম রাগে ফুলিয়া উঠিয়া কহিল, "আমার অপরাধ?"<br />
<br />
গিবরিল কহিল, "ঈভ টীজিং!"Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-63626885149776099122010-12-01T04:39:00.000+06:002010-12-04T04:39:57.642+06:00ভোদাইচরিতমানস ০৮ভোদাই আসিয়া কহিল, "একটি সামাজিক ব্যবসা খুলিব ভাবিতেছি।"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "বেশ তো। চমৎকার। কী লইয়া ব্যবসা করিবে?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "ঘোড়া পালিব।"<br />
<br />
আমি থতমত খাইয়া কহিলাম, "ঘোড়া দিয়া সামাজিক ব্যবসা করিবে কীরূপে?"<br />
<br />
ভোদাই সোৎসাহে কহিল, "গরীবের ঘোড়ারোগের নাম শুনিয়াছ?"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "না। কী হয় এই রোগে?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "এই রোগে ধরিলে গরীব ঘোড়া ক্রয়ের জন্য ক্ষেপিয়া ওঠে। কিন্তু দেশে পর্যাপ্ত ঘোড়া নাই। যা ছিল তাহা অ্যানথ্রাক্সে মরিয়া সাফ হইয়াছে। নতুন করিয়া ঘোড়া পালিব।"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "কিন্তু গরীব কীরূপে ঘোড়া ক্রয় করিবে?"<br />
<br />
ভোদাই হাসিয়া কহিল, "কেন? ক্ষুদ্রঋণ লইয়া?"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "গরীব কেন ক্ষুদ্রঋণ লইয়া ঘোড়া কিনিবে?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "কী আপদ! তাহার ঘোড়ারোগ হইয়াছে। সে ঘোড়া কিনিবে না তো কী কিনিবে?"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "ঘোড়া কিনিয়া গরীব কী করিবে?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "দেশ হইতে দারিদ্র্য দূর করিবে, আবার কী?"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "গরীব ঘোড়া কিনিলে দেশ হইতে দারিদ্র্য দূর হইবে কীরূপে?"<br />
<br />
ভোদাই অধৈর্য হইয়া কহিল, "তুমি তো আচ্ছা বুরবক হে! একটি জলজ্যান্ত ঘোড়ার মালিককে কি গরীব বলা যায়?"<br />
<br />
আমি ভাবিয়া কহিলাম, "না .... কিন্তু ...।"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "কোনো কিন্তু নাই। ঘোড়া ক্রয় করিবার পর গরীব আর গরীব থাকিবে না। ফলে দেশেও আর দরিদ্র থাকিবে না। দেশ হইতে দারিদ্র্য পাকাপাকিভাবে দূর হইবে।"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "কিন্তু গরীব সেই ক্ষুদ্রঋণ তাহার পর শোধ করিবে কীরূপে?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "উহা আমি কী করিয়া কহিব? উহা গরীবের মাথাব্যথা। সে ঘোড়া লইয়া সার্কাস দেখাইতে পারে, ঘোড়ার গাড়ি টানাইতে পারে, স্ত্রী ঘোড়ার গর্ভধারণের জন্য পুরুষ ঘোড়া ভাড়া দিতে পারে, ঘোড়ার মাংস গাবতলীর ভাতের হোটেলে গরু বলিয়া বিক্রি করিতে পারে, ঘোড়ার দুধ হইতে দই বানাইয়া অপুষ্ট শিশুদের কাছে বিক্রি করিতে পারে, ঘোড়ার চামড়া দিয়া লেদার জ্যাকেট বানাইয়া বেচিতে পারে ... কত শত উপায় আছে! তবে হাঁ! সুদ পরিশোধ করিতে না পারিলে উহার বাড়ির চাল খুলিয়া আনিব বলিয়া দিতেছি! সামাজিক ব্যবসায় নামিয়াছি, দাতব্য তো আর খুলি নাই!"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "ঘোড়া পালনের জন্য পুঁজি আছে তোমার কাছে?"<br />
<br />
ভোদাই হাসিয়া কহিল, "নরওয়ের এক ব্যক্তির সহিত খাতির হইয়াছে ইদানীং। সে আশ্বাস দিয়াছে, টাকা অনুদান দিবে।"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "কিন্তু সামাজিক ব্যবসায় তোমার কী লাভ ভোদাই?"<br />
<br />
ভোদাই ফিসফিস করিয়া কহিল, "অনুদানের টাকা ঘোড়া কম্পানিতে সরাসরি খাটাইব না ভাই মুখফোড়! প্রথমে ভোদাই এন্টারপ্রাইজে সেই টাকা সরাইয়া লইব! উহার পর ঘোড়া কম্পানি ভোদাই এন্টারপ্রাইজের নিকট হইতে সেই টাকা চড়া সুদে ঋণ করিবে। ঘোড়া কম্পানির মুনাফা হইতে সেই ঋণের সুদ জমা পড়িবে ভোদাই এন্টারপ্রাইজের হালখাতায়!"<br />
<br />
আমি চমকিত হইয়া কহিলাম, "তুমি এত সূক্ষ্ম মারপ্যাঁচ শিখিলে কীরূপে?"<br />
<br />
ভোদাই বিগলিত হাসিয়া কহিল, "দেশের শান্তির জন্য কিছু মারপ্যাঁচ তো শিখিতে হইবেই ভাই মুখফোড়!"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "তা কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তির সহিত আলাপ করিয়াছ ব্যবসার আঁটঘাট লইয়া?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "হাঁ! জুলিয়ান আসাঞ্জ নামক এক অস্ট্রেলিয় বন্ধুর সহিত আলাপ করিলাম। তবে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ তাহার কোনো খবর নাই। অসুখবিসুখ করিয়াছে বোধহয়।"<br />
<br />
আমি তব্দা খাইয়া কহিলাম, "বল কী! .... তোমার এই পরিকল্পনা গোপন থাকিবে তো?"<br />
<br />
ভোদাই পরম নিশ্চিন্তে চক্ষু বুঁজিয়া কহিল, "তা থাকিবে। জুলিয়ানের পেটে বোমা মারিলেও সে গুহ্য কথা ফাঁস করিবে না।"Unknownnoreply@blogger.com2tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-24961917327914877002010-11-22T04:41:00.000+06:002010-12-04T04:43:42.331+06:00আদমচরিত ০২৯<a href="http://www.flickr.com/photos/warcrime71/4619642501/" title="adam01 by যà§à¦¦à§à¦§à¦¾à¦ªà¦°à¦¾, on Flickr"><img alt="adam01" height="500" src="http://farm5.static.flickr.com/4020/4619642501_311fd112c1.jpg" width="422" /></a><br />
<br />
<br />
আদম পরিধানের আপেলপত্রটি খুলিয়া চক্ষু মুছিতে মুছিতে কান্দিতে লাগিল। সাংবাদিক স্বর্গদূতদের মধ্যে কেহ গলা খাঁকরাইল, কেহ ভিন্নদিকে মুখ ফিরাইল, কেহ ছবি খিঁচিতে লাগিল।<br />
<br />
তিন মিনিট ক্রন্দন শেষে সিক্ত আপেলপত্রটি নিংড়াইয়া আদম পুনরায় কৌপীন আকারে পরিধান করিয়া নাক টানিয়া কহিল, "আমাকে স্বর্গ হইতে এক বস্ত্রে বহিষ্কার করা হইয়াছে। ইহা স্বর্গের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী। আমি মকদ্দমা করিব।"<br />
<br />
জনৈক স্বর্গদূত রশ্মিপেন্সিল উঁচু করিয়া কহিল, "আপনি কি ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা দিতে পারেন?"<br />
<br />
আদম দৃপ্ত কণ্ঠে কহিল, "আলবত পারি। গতকল্য স্বর্গদূতদের নোয়াখালি চক্রের প্রধান মওদুদাইল দরজা ভাঙিয়া আমার গৃহে অনুপ্রবেশ করে। তাহারা আমার একষট্টি জন গৃহভৃত্যকে মারিয়া পিটিয়া একশা করে। আমি তখন সবেমাত্র বাষ্পস্নান সারিয়া জাকুজিতে বসিয়া শীতকযন্ত্র হইতে কোমল পানীয়ের আধার বাহির করিয়া পাত্রে ঢালিতেছি। তাহারা হা রে রে রে করিয়া আসিয়া কহিল, আমাকে স্বর্গ হইতে বহিষ্কারের আদেশ দিয়াছেন ঈশ্বর। আমি কহিলাম, ওরে সন্বন্ধীর পুত্রেরা, তোরা কি অবগত আছিস, স্বর্গের সহিত আমার সম্পর্ক কত সুগভীর? স্বর্গের প্রথম স্থায়ী কমিটির কনিষ্ঠতম সদস্য ছিলুম আমি। আর আজ তোরা আসিয়াছিস এই শিশ্নকেশের বহিষ্কারাদেশ লইয়া!"<br />
<br />
আরেক স্বর্গদূত কহিল, "কিন্তু ...।"<br />
<br />
আদম কহিল, "মওদুদাইল কহিল, এই কে আছিস, ইহাকে কোলে তুলিয়া নিয়ায়! তখন নোয়াখালি চক্রের এক গুণ্ডা স্বর্গদূত আমার বাহু পাকড়াইয়া ধরিল। আমি কহিলাম, সাইয়া বাইয়া ছোড় না, কচ্চি কলিয়া তোড় না! তাহারা শুনিল না! আমাকে তুলিয়া স্বর্গ হইতে বহিষ্কার করিল। চৌকির পার্শ্ববর্তী তোরঙ্গে আমার কিছু জরুরি কাগজপত্র আছে, সেগুলি পর্যন্ত সঙ্গে নিতে দেয় নাই।"<br />
<br />
এক স্বর্গদূত কহিল, "কেন আপনাকে ঈশ্বর বহিষ্কার করিলেন?"<br />
<br />
আদম দৃপ্ত কণ্ঠে কহিল, "ইহা সকলই নোয়াখালি চক্রের ষড়যন্ত্র। আমি বরাবরই ঈশ্বর ম্যাডামের প্রতি অনুগত। আমি যে এই ফালতু বহিষ্কারাদেশের বিরুদ্ধে মকদ্দমা করিয়া জয়লাভ করিব, তাহাই নহে ভাইসব! স্বর্গ বর্তমানে রাজনৈতিক কোন্দলে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হইয়াছে। স্বর্গের অন্যতম সমস্যা আদম ও ঈভের মধ্যে কলহ। উহাদের দুইজনকে আলোচনার খাটে একসাথে শোয়াইবার লক্ষে আমি কাজ করিয়া চলিব। আগামী নির্বাচনে আমি এই নোয়াখালি পরিবারের সকল চক্রান্ত নস্যাৎ করিয়া ঈশ্বর ম্যাডামের হস্ত হইতে টিকিট লইয়া দাঁড়াইব।"<br />
<br />
আরেক স্বর্গদূত কহিল, "কিন্তু কীভাবে?"<br />
<br />
আদম কহিল, "অতীতেও বহু বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হইয়াছে। ঈশ্বর শয়তানকে বহিষ্কার করিয়াছিলেন, পরে বাপ বাপ করিয়া কাছে ডাকিয়া মস্তকে পোঁদে হাত বুলাইয়া তাহাকে পঞ্চায়েতবিষয়ক উপদেষ্টা পদে বসাইয়াছেন। আমার ক্ষেত্রে তাহা ঘটিতে কতক্ষণ?"<br />
<br />
এক স্বর্গদূত কহিল, "কিন্তু অতীতে তো ডাক্তারাইল মান্নানাইল তানবীরাইলকে ঈশ্বর কর্ণের লতি ধরিয়া মাজায় পদাঘাত করিয়া দূর করিয়া দিয়াছেন। তাহারা তো আর স্বর্গে ফিরিয়া আসিতে পারিল না, মর্ত্যেই বিকল পোঁদহারা পার্টি খুলিয়া কিয়ৎকাল রাজনৈতিক পিকনিকসাধন করিল। আপনার পরিণতি যদি সেইরূপ হয়?"<br />
<br />
আদম বিরস মুখে কহিল, "নো কমেন্টস।"Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-82459505867124464322010-11-15T04:45:00.000+06:002010-12-04T04:45:34.196+06:00ভোদাইচরিতমানস ০৭<sub>সতীনাথ ভাদুড়ীর ঢোঁড়াই চরিত মানসের কোন খণ্ডের সাথে এই কাহিনীর কোন মিল নাই। কাজেই খোঁচ ধরিয়া সময় বরবাদ করিবেন না। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য লিখিত কিঞ্চিৎ অশালীন পোস্ট, শিশুরা দূরে গিয়া খেলো। </sub><br />
<br />
ভোদাই একগাল হাসিয়া কহিল, "ঐ পাতলা পাতলা পুস্তকগুলি ম্যাডামের হইতেই পারে না!"<br />
<br />
আমি গলা খাঁকরাইয়া কহিলাম, "তা বটে!"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "উহা কোনো বিদেশী অপশক্তির কর্ম।"<br />
<br />
আমি সায় দিলাম, "হইতেই পারে!"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "কিয়ৎকাল পূর্বে চীনদেশের রাষ্ট্রপতি দেশে সফরে আসিয়াছিলেন কি আসেন নাই?"<br />
<br />
আমি ভাবিয়া উত্তর করিলাম, "আসিয়াছিলেন।"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "পুস্তকগুলিও চীনদেশে ছাপা।"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "তো?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "আমার ধারণা সেই পগেয়া পাজি রাষ্ট্রপতি হতভাগাটিই বগলে বোন্দা বান্ধিয়া এইসব দুষ্ট মেগাজিন আনিয়াছে!"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "ম্যাডামের তোরঙ্গে দুষ্ট মেগাজিন স্থাপন করিয়া চীনদেশের রাষ্ট্রপতির কী লাভ?"<br />
<br />
ভোদাই অট্টহাস্য মারিয়া কহিল, "তুমি তো দেখি বিপণনশাস্ত্র সম্পর্কে পুরাই অজ্ঞ! গোটা জাতি টেলিভিশনে দেখিয়াছে এই দৃশ্য। স্বয়ং ম্যাডামকে এই মেগাজিনের অনুরাগী পাঠিকা সাজাইয়া বিজ্ঞাপন মারিলে কাটতি কীরূপে বাড়িবে ভাবিয়া দেখ! চৈনিক বণিকেরা বড়ই ধুরন্ধর! বাণিজ্য সম্প্রসারণের ব্যাপারে তাহারা উদ্যোগী। তাই সন্দেহ করিতেছি তাহারাই দুষ্ট চর লাগাইয়া ম্যাডামের খালি তোরঙ্গে এইসব পুস্তক গুঁজিয়া দিয়াছে!"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "তাহলে তোরঙ্গে কী ছিলো?"<br />
<br />
ভোদাই কহিল, "পবিত্র গ্রন্থ, আবার কী? ম্যাডাম উহা হাতে হাতে লইয়া গিয়াছেন। আর পিছনে পড়িয়া থাকা শূন্যস্থানটি হতভাগারা এইসব আজেবাজে জিনিস দ্বারা পূর্ণ করিয়াছে ম্যাডামের বদনাম করিবার জন্য! এক লোষ্ট্রে দুই পক্ষী!"<br />
<br />
আমি কহিলাম, "তাই বলিয়া চীনা রাষ্ট্রপতি ... ?"<br />
<br />
ভোদাই চটিয়া কহিল, "কেন রে বাপু? চীনদেশের রাষ্ট্রপতি কি অথর্ব নাকি? সে জ্যাকি চ্যানের দেশের লোক, আর বগলে করিয়া এক বোন্দা পাতলা পুস্তক আনিতে পারিবে না?"<br />
<br />
আমি মিনমিন করিয়া কহিলাম, "তা বটে!"<br />
<br />
ভোদাই গদগদ কণ্ঠে কহিল, "পুস্তকগুলির প্রচ্ছদ বড় চিত্তাকর্ষক! দেখিলেই চিত্ত চুলবুল করে। তোমার ভাবীর কথা চিন্তা করিয়া এক কপি কিনিব ভাবিতেছি। আজকাল লেখাপড়া না করিলে সহজে কিছু হয় না।"Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-16350009483381754942010-11-09T04:46:00.003+06:002010-12-04T04:47:56.680+06:00আদমচরিত ০২৮<a href="http://www.flickr.com/photos/warcrime71/4619642501/" title="adam01 by যà§à¦¦à§à¦§à¦¾à¦ªà¦°à¦¾, on Flickr"><img alt="adam01" height="500" src="http://farm5.static.flickr.com/4020/4619642501_311fd112c1.jpg" width="422" /></a><br />
<br />
ঈশ্বর তাকিয়ায় হেলান দিয়ে পান চিবাইতেছিলেন। আজরিল তাহার সম্মুখে দাঁড়াইয়া আনমনে ক্ষুরধার ভোজালিতে শান দিতেছে।<br />
<br />
ঈশ্বর গলা খাঁকরাইয়া চিলুমচিতে পিক ফেলিয়া বলিলেন, "ভোজালিতে শান দিতেছ কেন?"<br />
<br />
আজরিল শীতল কণ্ঠে কহিল, "কখন কী কাটিয়া আনিতে হয়, বলা তো যায় না। তাই ধার দিয়া রাখি।"<br />
<br />
ঈশ্বর খুব একটা উচ্চবাচ্য করিলেন না। জুলিয়াস সিজারের ঘটনার পর হইতেই তিনি বুঝিয়াছেন, বিশ্বস্ত কেউ যদি নিকটে ধারালো অস্ত্র লইয়া অবস্থান করে, তাহাকে না চটানোই ভালো। এই কারণেই তিনি নাপিত জিলেটাইলের সহিত কখনও দুর্ব্যবহার করেন না।<br />
<br />
ঈশ্বর গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "ধার দিবার চর্চাটি মন্দ নহে। তবে দেখিও, সুদ আদায়ের ব্যবসায় অবলম্বন করিও না। অযথা আমার বদনাম হইবে। ইউনুসের ন্যায় কোনো কারবারও ফাঁদিয়া বসিও না যেন।"<br />
<br />
আজরিল নিরুত্তর থাকিয়া ভোজালিতে শান দিতে লাগিল।<br />
<br />
ঈশ্বর পুনরায় এক খিলি পান মুখে পুরিয়া চুনদানি হইতে এক আঙুল চুন তুলিয়া মুখে পুরিয়া কহিলেন, "তোমাকে ডাকিয়াছি বিশেষ একটি কাজে।"<br />
<br />
আজরিল কহিল, "বলুন খোদাবন্দ, কাহার প্রাণ হরণ করিয়া আপনার কদমপদ্মে পেশ করিব?"<br />
<br />
ঈশ্বর বিরক্ত স্বরে কহিলেন, "আ মোলো যা, ক বলিলেই ক্যাটাস্ট্রফি বুঝিয়া ফেল! প্রাণ হরণ করিতে হইবে কেন বাপু? ভোজালিখানা কোষবদ্ধ রাখিয়া গালে দুই চারটা চড় মারিতে পারিবে?"<br />
<br />
আজরিল কহিল, "আলবাৎ হুজুর! কাহার গাল?"<br />
<br />
ঈশ্বর দক্ষিণে-বামে চুপিচুপি চাহিয়া গলা নিচু করিয়া কহিলেন, "আদমের গাল!"<br />
<br />
আজরিল দন্তে দন্তে প্রবল ঘর্ষণ করিয়া কহিল, "এখনই গিয়া পাজিটার গাল থাবড়াইয়া লোহিত করিতেছি জাঁহাপন!"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আরে শোনো না বাপু! বিস্তারিত শ্রবণ কর আগে। শুধু আদমকে চটকনা মারিলেই চলিবে না। তাহার বেয়াড়া ভার্যাটিকেও কেশের গ্রন্থি ধরিয়া ঘরছাড়া করিতে হইবে। পারিবে স্ত্রীলোকের দেহে হস্তক্ষেপ করিতে?"<br />
<br />
আজরিল কহিল, "আমার কোনো জেণ্ডার বায়াস নাই সদাপ্রভু। অ্যাকশনে নামিয়া স্ত্রী-পুরুষ বৈষম্য করিব না। আদমের গণ্ডদেশে গণিয়া গণিয়া এক হালি থাপ্পড় কষাইব, আর তাহার মুখরা স্ত্রীটির কেশ মুষ্টিতে লইয়া ঘর হইতে বহিষ্কার করিব।"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "উঁহু, ঘর হইতে উভয়কেই নিষ্ক্রান্ত করিতে হইবে। সম্ভব হইলে উহাদের ধরিয়া পৃথিবীতে ছাড়িয়া দিয়া আইস।"<br />
<br />
আজরিল মুখ গোমড়া করিয়া কহিল, "পৃথিবীতে যাইতে হইবে?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "হাঁ। ঘুরিয়া আইস। টাকাপয়সা লাগিলে খাজাঞ্চিকে বলিও, কিংবা ফিরিয়া আসিয়া বিল করিয়া টিএডিএ তুলিয়া লইও।"<br />
<br />
আজরিল কহিল, "জো হুকুম জাঁহাপন! পৃথিবীতে কারো প্রাণ হরণ করিতে হইবে?"<br />
<br />
ঈশ্বর বিড়বিড় করিয়া কহিলেন, "এমন ট্রিগারহ্যাপি অনুচর লইয়া কী বাটে পড়িলাম!" তারপর গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "আচ্ছা, মোটাতাজা ডাইনোসর যাতায়াতের পথে পড়িলে প্রাণখানি হরণ করিয়া আনিও। আমার কাছে আনিয়া দিবার দরকার নাই, ডানোর কৌটায় ভরিয়া স্টোররুমে রাখিয়া দিলেই চলিবে। এখন কাজে যাও।"<br />
<br />
আজরিল কুর্ণিশ করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইল।<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "তা একবারও কি মনে প্রশ্ন জাগিল না, আদম আর ঈভকে কেন বিতাড়ন করিতেছি?"<br />
<br />
আজরিল কহিল, "কেন হুজুর?"<br />
<br />
ঈশ্বরের চোখ চকচক করিয়া উঠিল। তিনি ফিসফিস করিয়া কহিলেন, "কয়লা! কয়লা পাওয়া গিয়াছে উহাদের বাসগৃহের নিচে!"<br />
<br />
আজরিল বলিল, "আচ্ছা।"<br />
<br />
ঈশ্বর বিরক্ত হইলেন। নির্বোধ কতগুলি দূত নির্মাণ করিয়াছেন তিনি। কিছু কূট আলাপ করিবার যোগ্যতা নাই। রশ্মির অপচয় আর কাহাকে বলে?<br />
<br />
তিনি গলা খাঁকরাইয়া কহিলেন, "আচ্ছা, তুমি কাজে লাগিয়া পড়ো বরং। আর দেখ গেস্ট রুমে এশিয়া এনার্জি হইতে কে যেন আসিয়া অপেক্ষা করিতেছে, তাহাকে আমার কক্ষে পাঠাইয়া দিও।"Unknownnoreply@blogger.com0tag:blogger.com,1999:blog-30298477.post-55175199374445909452010-10-22T04:49:00.003+06:002010-12-04T04:50:51.022+06:00আদমচরিত ০২৭<a href="http://www.flickr.com/photos/warcrime71/4619642501/" title="adam01 by যà§à¦¦à§à¦§à¦¾à¦ªà¦°à¦¾, on Flickr"><img alt="adam01" height="500" src="http://farm5.static.flickr.com/4020/4619642501_311fd112c1.jpg" width="422" /></a><br />
<br />
<br />
ঈশ্বর একগাদা প্যাপিরাসের তোড়া লইয়া গলদঘর্ম হইতেছিলেন, সেলুকাইল আসিয়া লম্বা সেলাম ঠুকিয়া কহিল, "খোদাবন্দ! আমাকে তলব করিয়াছিলেন?"<br />
<br />
ঈশ্বর প্যাপিরাসের তোড়া নামাইয়া রাখিয়া নাসিকা হইতে চশমাখানি নামাইয়া কহিলেন, "সেলুকাইল, পাটীগণিতে তোমার ব্যুৎপত্তি কেমন?"<br />
<br />
সেলুকাইল ঢোঁক গিলিয়া কহিল, "গণিতে আমি বরাবরই কিঞ্চিৎ অপক্ক জাঁহাপন!"<br />
<br />
ঈশ্বর বেজার হইয়া কহিলেন, "আমারও দীর্ঘকাল চর্চা নাই। যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগে কোনোমতে উৎরাইয়া গেলেও ভগ্নাংশ, সুদকষা প্রভৃতিতে গিয়া বিষম গোলযোগের সম্মুখীন হইয়াছি।"<br />
<br />
সেলুকাইল কহিল, "কী এমন কঠিন হিসাব করিতেছেন, সদাপ্রভু? গণিত অলিম্পিয়াডে যোগ দিবেন নাকি?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "আদম আর ঈভ স্বর্গকোষ হইতে প্রচুর অর্থ উত্তোলন করিতেছে নানা বিল দেখাইয়া। হতভাগা প্রাইসওয়াটারহাউসকুপারাইলকে দায়িত্ব দিয়াছিলাম এইসব দলিলাদি পরীক্ষানিরীক্ষা করিতে। বেটা কোনো কাজেরই নহে। দিবানিশি ফেসবুকে ফার্মভিল খেলে!"<br />
<br />
সেলুকাইল কহিল, "হিসাবে কি কোনো গোলযোগ খুঁজিয়া পাইলেন?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "হিসাবে বিলক্ষণ গোলযোগ আছে সেলুকাইল! আদম আর ঈভ, উভয়েই ভুয়া বিল দেখাইয়া সহস্র সহস্র মুদ্রা গাপ করিয়াছে এতদিন।"<br />
<br />
সেলুকাইল কহিল, "কীরূপে মালেকুল্মুল্ক?"<br />
<br />
ঈশ্বর কহিলেন, "উহারা নন্দন কাননে থাকে, কিন্তু বিল করিয়াছে পৃথিবীতে বাড়ি ভাড়া বাবদ!"<br />
<br />
সেলুকাইল দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া কহিল, "উহারা কি জ্ঞানবৃক্ষের ফল কোনোরূপে ভক্ষণ করিয়াছে হুজুর?<br />
<br />
ঈশ্বর প্যাপিরাসের তোড়া আছড়াইয়া ফেলিয়া কহিলেন, "জ্ঞানবৃক্ষের ফল ভক্ষণ না করিয়াই ইহারা পাকিয়া ঝুনা হইয়া গিয়াছে! এই দুর্নীতির শাস্তি রগে রগে শোধ করিব। কানে ধরিয়া স্বর্গ হইতে বাহির করিব দুই পাপিষ্ঠকে!"<br />
<br />
<hr><br />
<a href="http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-10-22/news/103275">এই খবরের</a> সহিত কোনোই সম্পর্ক নাই।Unknownnoreply@blogger.com0