Wednesday, June 04, 2008

আদমচরিত ০১০

adam01

আদম বিষন্নবদনে একটি দুধের নহরে পা ডুবাইয়া বসিয়াছিলো, স্বর্গদূত গিবরিল একটা রশ্মিনির্মিত গেন্ডারি চিবাইতে চিবাইতে আসিয়া কহিলো, "আদম! হইয়াছে কী? মুখখানি মলিন কেন?"

আদম দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়া বলিলো, "আর কী হইবে? ঈভকে পটাইয়া খাটে তুলিতে পারিতেছি না। মাগী কেবলই নিষিদ্ধ ফলের জন্য বায়নাক্কা ধরে।"

গিবরিল কহিলো, "তুমি আর কতদিন ঈভের পশ্চাদ্ধাবন করিবে? এই বেলা আমাদের সাথে রশ্মিপট্টিতে চলো। সেইখানে গিজগিজ করিতেছে স্বর্গবেশ্যাদের দল!"

আদম চটিয়া গিয়া কহিলো, "তোমার মতো রশ্মিনির্মিত উজবুক যদি বটিতাম তবে কবেই রশ্মিপট্টি ছারখার করিয়া আসিতাম! আমি মৃত্তিকা নির্মিত আদম! আমার ঈভ আর এই দক্ষিণ হস্ত ছাড়া আর গতি কী?"

গিবরিল গেন্ডারির রশ্মিনির্মিত খোসা ছাড়াইতে ছাড়াইতে কহিলো, "তোমার বাম হস্তে কী হইয়াছে?"

আদম থতমত খাইয়া কহিলো, "বাম হস্তে ঠিক জুইত লাভ করি না। ক্যামন যেন বোধ হয়!"

গিবরিল কিছুক্ষণ আনমনে গেন্ডারি খাইয়া কহিলো, "ঈশ্বরকে বুঝাইয়া বলিলে তিনি হয়তো তোমার জন্য আরেকজন বেইব নির্মাণ করিবেন।"

আদম দাঁত খিঁচাইয়া কহিলো, "হাঁ, বলিয়াছে তোকে! আমার পঞ্জরাস্থিখানা খুলিয়া লইবার আগে ঈশ্বর কত মূলাই দোদু্ল্যমান করিয়াছিলেন আমার নাসিকার সম্মুখে! বলিয়াছিলেন, হাতের কাজে খ্যামা দাও আদম! তোমাকে একখানা সঙ্গিনী বানাইয়া দিতেছি, তাহার সহিত যাহা মন চায় করিও! ... উঁহুহু, ঐসব বালকভুলানো কায়দায় আমি আর পটিতেছি না! তখন পঞ্জর গিয়াছে, এরপর হয়তো একখানি রানের হাড্ডি খুলিয়া লইয়া আরেক নচ্ছাড় মেয়েছেলে তৈয়ার করিবেন! আর দিনকাল ভালো না, ইদানীং শুনিতেছি নারীরা নারীর প্রতি আসক্ত হইয়া পড়িতেছে। নতুন একখানা মেয়ে আমদানি হইলে আমার আমছালা সবই লুপ্ত হইতে পারে!"

গিবরিল বলিলো, "তোমার মস্তিষ্ক অত্যন্ত ক্ষিপ্র, হে আদম! এতো এতো নৈরাশ্যজনক সম্ভাবনা তুমি ভাবিয়া রাখিয়াছো!"

আদম দুধের নহরে নিষ্ঠীবন ফেলিয়া কহিলো, "আমার মতো ফাঁপরে থাকিলে তুমিও ভাবিতে। ঈশ্বরকে একখানা আলটিমেটাম দিবো ভাবিতেছি, নিষিদ্ধ ফলের অ্যাকসেস কিয়দকালের জন্য উন্মুক্ত করিতে! রাজি না হইলে সপরিবারে স্বর্গ ত্যাগ করিবো!"

গিবরিল বলিলো, "তুমি নিষিদ্ধ ফলই কেন খাইতে চাও বারে বারে? আলু খাইয়া দেখো না কেন?"

আদম চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া কহিলো, "আলু খাইয়া কী হইবে?"

গিবরিল কহিলো, "স্বর্গবার্তা চ্যানেলে মমতাজের সঙ্গীতখানি শ্রবণ করো নাই বুঝি? শুনিলেই উপলব্ধি করিবে, আলু কতো উপকারী ফল!"

আদম দন্তসংঘর্ষ সহযোগে কহিলো, "আলু ফল?"

গিবরিল হাসিমুখে ইতিবাচক উত্তর দিতে যাইতেছিলো, আদম চোখের পলকে খাড়া হইয়া তাহাকে বিকট এক পদাঘাতে দূর করিয়া দিলো। গিবরিলের শরীর রশ্মিনির্মিত বলিয়া তেমন কোন চোট না লাগিলেও সে দুঃখিত চিত্ত রশ্মপট্টির দিকে যাত্রা করিলো ডানা ঝাপটাইয়া।

আদম আবার আনমনে দুধের নহরের তীরে বসিয়া সপ্তপঞ্চ চিন্তা করিতেছিলো, হঠাৎ বোঁটকা ঘ্রাণ নাসিকায় আঘাত করিতে চমকাইয়া উঠিয়া দেখিলো, শয়তান তাহার পাশে আসিয়া বসিয়াছে। তাহার হস্তে একটি ঠোঙা।

আদম বলিলো, "ওরে নীচ শয়তান! কী বারতা কহ!"

শয়তান মিটিমিটি হাসিয়া কহিলো, "আমি তো ভালোই আছি। তোমার অবস্থা দেখিয়া মনটা ভালো নাই।"

আদম কহিলো, "নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার একটা উপায় বাতলাইতে পারো?"

শয়তান কহিলো, "নিষিদ্ধ ফল খাওয়া এখন শয়তানেরও অসাধ্য হইয়া গিয়াছে। রীতিমতো অগ্নিমূল্য! তবে বিকল্প আছে বৈকি।"

আদম লম্ফ দিয়া উঠিয়া কহিলো, "আছে?"

শয়তান কহিলো, "আছে। সে এক আজব ফল। একটি খাইলেই দেহে পাইবে লাবণ্য, মনে পাইবে আনন্দ। অশ্বের ন্যায় শক্তিলাভ করিবে শরীরে। শরীরের কোন কোন স্থানে লৌহভাব দেখা দিতে পারে। দিনে একাধিকবার সক্রিয় হইলেও অস্ত্র টলিবে না। স্ত্রীলোক মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় পায়ে পায়ে ঘুরিবে। ... কী, খাইয়া দেখিবে নাকি?"

আদম শয়তানের দুই পদ জড়াইয়া ধরিয়া ফোঁপাইয়া উঠিলো।

শয়তান ধীরলয়ে ঠোঙা হইতে একটি ফল বাহির করিয়া আচমকা আদমের মুখে সজোরে গুঁজিয়া দিলো। ভ্যাবাচ্যাকা খাইয়া আদম কোঁৎ করিয়া গিলিয়া ফেলিলো।

"ইহা কী ফল?" আদম মুখ বিকৃত করিয়া প্রশ্ন করিলো।

শয়তান মিটিমিটি হাসিয়া কহিলো, "জলপাই।"

আদম বার কয়েক জলপাই নামটি জপিয়া হঠাৎ উঠিয়া শয়তানের করমর্দন করিয়া জোর পায়ে বাটীর পথে হাঁটা ধরিলো।

শয়তান আনমনে হাসিতে লাগিলো আদমের গুহ্যদ্বারের প্রস্থচ্ছেদের কথা ভাবিয়া। বোকা আদম জানে না, জলপাই যত সহজে প্রবেশ করে, তত সহজে নিষ্ক্রান্ত হয় না।

No comments: