Saturday, January 17, 2009

ভোদাইচরিতমানস ০৬

ভোদাই বৈকালিক ভ্রমণ সারিয়াই বুঝি আসিয়াছিল, কিছু হন্টনজনিত ক্লান্তি তাহার বদনে। কিন্তু মুখে সদাবিরাজমান সেই ভোদাইহাস্যখানি।

প্রশান্তচিত্তে ধানুকে হাঁক পাড়িয়া চা দিতে ডাকিলাম। ভোদাই ধপ করিয়া কৌচে বসিয়া পড়িয়া বলিল, "প্রবল শরীরচর্চ্চা হইতেছে বন্ধু মুখফোড়! বহুদিন পর দৌড়াইলাম।"

আমি শুধাইলাম, "কোথায় দৌড়াইলে ভোদাই?"

ভোদাই একখানি ঠ্যাং অপরখানির ওপর তুলিয়া উভয় ঠ্যাং আন্দোলিত করিতে করিতে বলিল, "কোথায় দৌড়াই নাই বল! সেই বাইতুল মুকাররম হইতে এই তোমার বাড়ি বাইতুল মুখফোড় পর্যন্ত দৌড়াইয়া আসিলাম কত গলিঘুপচি ঘুরিয়া!"

আমি বিস্মিত হইয়া শুধাইলাম, "আজ শুক্কুরবার তুমি বাইতুল মুকাররম গিয়াছিলে কী কর্মে? আজ ত মার্কেট সকলই বন্ধ?"

ভোদাই আড়নয়নে আমার পানে চাহিয়া তির্যক বক্রোক্তি করিল, "বাইতুল মুকাররমে শুক্কুরবারে জনতা কি মার্কেট করিতে যায় নাকি?"

আমি প্রবল বিস্মিত হইয়া বলিলাম, "তবে কি তুমি নামাজ পড়িতে গিয়াছিলে?"

ভোদাই হা হা অট্টহাসি হাসিয়া কহিল, "না! তবে মসজিদেই গিয়াছিলাম।"

আমার নজরে পড়িল, ভোদাইয়ের পায়ে সুদৃশ্য এক জোড়া চামড়ার জুতা।

শুধাইলাম, "তোমার তো সাহস কম নহে ভোদাই! এমন এক জোড়া বাহারী নধর চামড়ার জুতা সম্বল করিয়া তুমি শুক্রবারে নামাজ আদায় করিতে গিয়াছ? আমি ত শুনিয়াছি সেইখানে প্রায়শই জুতা লোপাট হইয়া থাকে!"

ভোদাই একটি চক্ষু নিমীলিত করিয়া বলিল, "হাঁ, হইয়া থাকে বটে! সেই কারণেই ত জুতা পুরাতন হইলে ঐখানে যাই!"

আমি থতমত খাইয়া কহিলাম, "মানে?"

ভোদাই কহিল, "আজ ব্যাপক জুতাজুতি হইয়াছে সেইখানে। খতিব লইয়া কলহ। নবাগত খতিব আর ভারপ্রাপ্ত খতিবের সমর্থকবৃন্দের মধ্যে কারবালা ঘটিয়াছে। শমশের লইয়া কেহ কারো মুন্ডচ্ছেদন করিতে না পারিলেও পাদুকার ঘায়ে কয়েকটি মুন্ডে চিড় ধরিয়াছে দেখিলাম।"

আমি হতবাক হইয়া পড়িলাম। প্রার্থনার স্থানে এ কি হুজ্জুত?

ভোদাই কহিল, "আজকাল লোকজন খুব হুঁশিয়ার, বুঝিলে? আগে পুরাতন জুতা রাখিয়া দেখিয়া শুনিয়া নতুন এক জোড়া সঠিক মাপের জুতা বাগাইয়া আনা কোন ঘটনাই ছিলো না। কিন্তু ইদানীং লোকজন জুতা প্রহরায় রাখে। মোবাইল ফোনের প্রসারের সাথে সাথে এই প্রহরার নেটওয়ার্কও অতিশয় শক্ত হইয়াছে। তাই দেখিলাম যে একটি গন্ডগোল না পাকাইলে জুতা বদলানো সম্ভন নয়।"

আমি রূদ্ধশ্বাসে বলিলাম, "অতঃপর?"

ভোদাই একগাল হাসিয়া কহিল, "আমি ভরসা করিয়া উঠিয়া চ্যাঁচাইয়া কহিলাম, অন্য চাই বস্ত্র চাই নতুন নতুন খতিব চাই! ইহা শুনিয়াই ব্যাপক শোরগোল উঠিল। যাহাদের অন্ন নাই তাহারা অন্নের দাবিতে আওয়াজ তুলিল। যাহাদের বস্ত্র নাই তাহারা বস্ত্রের দাবিতে চ্যাঁচাইল। যাহাদের খতিব নাই তাহারা খতিবের দাবিতে হট্টগোল পাকাইল। আমি হুঙ্কার মারিয়া কহিলাম, মারো জুতা মারো রে! বলিয়া অতিশয় পুরাতন দুটি পাম্প শু সবেগে নিক্ষেপ করিলাম ডানে বামে। অমনি এক হুলুস্থুলু বাঁধিয়া গেল। কিছু লোকে জুতার আগে জান বাঁচাইতে ভাগিলো। বাকিরা দুই দলে বিভক্ত হইয়া একে অপরকে ব্যাপক জুতাজুতি করিতে লাগিলো। আমি ধীরেসুস্থে অনেক দেখিয়া শুনিয়া এই জুতাজোড়া পায়ে গলাইয়া ছুট দিলাম। তাহার পর এই ত আসিলাম তোমার বাসায়! বলিব কী, খাসা ফিট করিয়াছে পায়ে। এ তো জুতা নয়, গজল!"

আমি নিশ্চুপ বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম, হতভাগাটাকে কীলাইয়া দূর করিতে পারিলে কীরূপ হয়।

ভোদাই চোখ টিপিয়া বলিল, "আসন্ন সপ্তাহেও শুনিয়াছি এর জের চলিবে। নতুন খতিব আসিবেন। পুরাতন খতিবের লোকজন ইতোমধ্যে পুরাতন জুতা সংগ্রহের জন্য মহল্লায় মহল্লায় চান্দা তুলিতেছে। তোমার সংগ্রহে থাকিলে এক জোড়া আমায় দাও।"

আমি চমকিয়া উঠিয়া কহিলাম, "কেন তোমাকে দিব কেন?"

ভোদাই কহিলো, "যদি কোন কারণে তাহারা গিয়ানজাম না করে? কারুকে তো কাজখানা উত্তমরূপে আগাইয়া নিতে হবে, নাকি?"

No comments: