Thursday, August 31, 2006

মোহনদাসের দুঃখ


মোহনদাস ভাঙা গলায় বলেন, "জবারলাল!"

জবারলাল মৃদু গলায় বলেন, "বাপু!"

মোহনদাস শুধান, "কোন খোঁজ পেলে?"

জবারলাল বলেন, "না বাপুজী।"

মোহনদাস সহিংস ভঙ্গিতে দাঁত কিড়মিড় করেন, "তবে কি এই নোয়াখাইল্যারাই ওকে নিয়ে কেটে কাচ্চি বিরিয়ানি খেয়েছে?"

জবারলাল শ্রাগ করেন ফরাসী কেতায়। "জানি না বাপুজী। এদের অনেক বদনাম আছে। কোন কাজই অসম্ভব নয়। তাছাড়া এই এলাকায় ফজলু বাবুর্চির কাচ্চি বিরিয়ানি ভূবনবিখ্যাত। কাজেই আপনি যা আশঙ্কা ঘটছেন তা সত্যিও হতে পারে।"

মোহনদাস ডুকরে ওঠেন, "আমি এখন তাহলে খাবো কী?"

জবারলাল বলেন, "আলুপটলের ঘ্যাঁট আর চাপাটি আছে। সেবন করে নিন আপাতত। পরে আরেকটা ছাগী যোগাড় করা যাবে।"

মোহনদাস চোখ মোছেন লেংটির খুঁট উলটে। জবারলাল অন্য দিকে মুখ ফেরান।

এরপর বিভিন্ন খবরের কাগজে রটে যায়, নোয়াখালির বর্বরগণ মাহাৎমার পোষা দুগ্ধদা ছাগীটিকে বিলকুল হজম করে ফেলেছে। ভারত জুড়ে নোয়াখাইল্যাদের ওপর চটে ওঠে আপামর অহিংসাবাদী।

তবে আসল ঘটনা অন্য। মোহনদাসের ছাগীটির ব্রহ্মচর্য অভ্যেস ছিলো না। ব্রহ্মচর্য কপচালে তো চাকরি যাবে বেচারির। দুদু না দিলে মাহাৎমা খাবেন কী? আর গুরুর সাথে পায়ে হেঁটে ভারতময় ঘুরে ঘুরে বেচারির চাকরির ওপরই ভারি অভক্তি এসে গিয়েছিলো। তাই জনৈক নোয়াখাইল্যা ছাগল জ্যামিতিরামের সাথে পরিচয় হবার পর সে প্রেমে পড়ে যায়। প্রেমে পড়ে যায় শ্যামল বাংলার কাঁঠাল পাতায় ছাওয়া মাঠঘাটের। আর এক রাতে সে গলায় বাঁধা দড়িখানা চিবিয়ে খেয়ে জ্যামিতিরামের পিছু পিছু ফোটে। জ্যামিতিরাম এমন পরদেশী ছাগী আগে ইলোপ করেনি, সেও খুশি মনে ছাগীকে নিয়ে চম্পট দেয় দূর অজানার পথে। বৃথাই নোয়াখাইল্যাদের ঘাড়ে ছাগল তছরূপ ও বিরিয়ানিভোজনের অপবাদ চাপে। জ্যামিতিরাম প্রেমিক ছাগল, তার সন্তান সন্ততিতে নোয়াখালির পথপ্রান্তর ছয়লাপ হয়ে ওঠে।

সেই বংশেরই এক প্রবাদপ্রতিম জনপ্রিয় পুরুষ ছাগুরাম

-----------

জুন ১৮, ২০০৬

No comments: